Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 4:25 pm

পুরুষের ৩৫ ও নারীর ৩৭ বছর করার সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে বাড়ছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা। পুরুষের ৩৫ ও নারীদের হবে ৩৭ বছর। অন্তর্বর্তী সরকারকে এমন সুপারিশ দিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পর্যালোচনা কমিটি। তবে অবসরের বয়সসীমা নিয়ে কোনো সুপারিশ করেনি কমিটি। গতকাল শনিবার একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। এক সপ্তাহ পর সরকারের কাছে সুপারিশ দিয়েছে তারা। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান, সাবেক যুগ্ম সচিব কাওসার জহুরা, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল ও সাইফুল ইসলাম।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, পরীক্ষার ধরন ও কর্মসংস্থানের সুযোগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছরই সুপারিশ করেছে পর্যালোচনা কমিটি। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি প্রায় এক যুগের। এই ইস্যুতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন হয়েছে রাজপথে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলে ৩২ বছর।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। সম্প্রতি কয়েকশ চাকরিপ্রত্যাশী শাহবাগে সমবেত হন। একপর্যায়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসে অবস্থান নেন। সেদিন তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানান।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর দাবির বিষয়টি পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছিল সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। কমিটিতে আরও তিনজন সদস্য ছিলেন। এই কমিটির দায়িত্ব ছিল চাকরিপ্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়ন করে জমা দেয়া হয়। এ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে পরামর্শ দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ কমিটির সাচিবিক সহায়তায় ছিল। দুদিন আগে সেই কমিটি সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ ছিল।

বয়স বৃদ্ধির দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের সঙ্গেও সম্প্রতি বসেছিল কমিটি। সেদিন কমিটির প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে, সরকারের বর্তমান নীতিমালা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা এবং সবকিছু চিন্তা করে এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে তাদের (আন্দোলনকারী) যে বক্তব্য, বয়স বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সেশনজট, করোনাসহ বিভিন্ন কারণে চাকরিতে প্রবেশের বিদ্যমান বয়স বাড়ানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি। বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে মুয়ীদ চৌধুরী বলেছিলেন, এটা (চাকরিতে প্রবেশের বয়স) বাড়ানো দরকার।