পুরোনো মোড়কে সিগারেট বিক্রি বিপুল রাজস্ব ফাঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো দেশের আইন ভঙ্গ করে গত অর্থবছরের পুরোনো ব্যান্ডরোল ও মোড়কে সিগারেট বিক্রি করছে। একইসঙ্গে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করে মুনাফা করছে। শুধু তাই নয়, বাড়তি যে দাম নেয়া হচ্ছে, সেটা চলতি অর্থবছরের চেয়েও অনেক বেশি। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। অথচ সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো এবং বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসির উদ্যোগে গতকাল আয়োজিত ‘জাতীয় তামাক কর নীতির রূপরেখা: তামাক কোম্পানির সিএসআর ও ইনকাম ট্যাক্স’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। মিটিং সফটওয়্যার জুমে এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষক ও একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা। অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার নাসির উদ্দীন শেখ, উন্নয়ন সমন্বয়ের ডিরেক্টর রিসার্চ আব্দুল্লাহ নাদভী এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, এবারের বাজেটে কর হার না বাড়িয়ে নামমাত্র মূল্য বাড়ানো হয়েছে। বাজেট ঘোষণার এক মাস আগেই তামাক কোম্পানিগুলো সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু বাজেট ঘোষণার পরও গত অর্থবছরের পুরোনো মোড়কে সিগারেট বিক্রি করছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো, যা আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইনে বলা হয়েছে বাজেট ঘোষণার পর পুরোনো ব্যান্ডরোলের সিগারেট বাজারজাত করা যাবে না। বাজারজাত করতে হলে নতুন দাম সিল মেরে সংযুক্ত করে দিতে হবে। অথচ তামাক কোম্পানি সেটা না মেনে দেড় মাস ধরেই ১০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো কেবল পুরোনো প্যাকেটে সিগারেট বাজারজাত ও বিক্রি করছে না, বরং এগুলো চলতি অর্থবছরের বেঁধে দেয়া মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে, যা তারা কখনোই করতে পারে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এ বিষয়ে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেয়া।

তারা আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন দেয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু নামমাত্র সিএসআর কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা নানাভাবে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করতে তামাক কোম্পানির এমন অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞ গোলাম মহিউদ্দীন ফারুকসহ দেশের বিভিন্ন তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ, উন্নয়নকর্মী ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০