Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 12:47 am

পুরোনো সব রেলসেতু মেরামতের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সারা দেশে পুরোনো রেলসেতুগুলো মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একগুচ্ছ উন্নয়নকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা আসে।

তিনি বলেন, ‘যে রেল ব্রিজ পুরোনো হয়ে যাওয়ায় অত্যন্ত ধীরগতিতে ট্রেন চলে, সময় বেশি লাগে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি থাকে। কাজেই আমি মনে করব সারা দেশে একটা সার্ভে করে যেখানে যত পুরোনো জরাজীর্ণ রেল ব্রিজ আছে, সেগুলো সব মেরামত করতে হবে। সে জন্য আমি মনে করি, রেলওয়ে একটা প্রজেক্ট আলাদাভাবে তৈরি করে আনবে। তাহলে আমরা সেটা করে দিতে পারি এবং দ্রুত কাজগুলো করতে পারি।’ সূত্র: বিডি নিউজ

অতীতের সরকারগুলো রেল যোগাযোগকে ‘সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সে কারণে তারা যেমন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে লোকবল বিদায় দিয়ে দেয়, আর বিভিন্ন জায়গায় লাইনগুলো বন্ধ করে দেয়। আমি মনে করি, এটা একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলওয়ের উন্নয়নে কী কী উদ্যোগ নিয়েছে সেসব বিষয়েও বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘রেলওয়েকে আমরা এখন সম্প্রসারণ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমার একটা অনুরোধ থাকবে যে আমরা রেললাইন বাড়াচ্ছি, নতুন নতুন বগি এবং যাত্রী পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করেছি। তবে রেলওয়ের পুরোনো যেসব ব্রিজ আছে বিভিন্ন কালভার্টের ওপর এবং বিভিন্ন ব্রিজ এই ব্রিজগুলো ভালোভাবে মেরামত করতে হবে। তার কারণ হলো, এগুলো এত পুরোনো।’

দেশবাসীকে পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, অনেক অর্থ খরচ করে পানি শোধন করে সেই পানি সরবরাহ করা হয়। এই পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে। পানির অপচয় বন্ধ করতে হবে।

ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকর নয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা… সেখানে একসময় আমি নিজেও খুব উৎসাহিত করতাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে লক্ষ্য করলাম, ঋণের পরিমাণ এত বেড়ে যায় যে, শেষে মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে হয় আত্মহত্যা করে, না হয় এলাকা ছেড়ে ভাগে, না হয় ছেলেমেয়ে বিক্রি করে, বাড়িঘর বিক্রি করে। নিঃস্ব হয়ে যায়। সে আর নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না। অর্থাৎ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যকর হয় না।’

শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরার পাশাপাশি তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার কথাও মনে করিয়ে দেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও জনগণের সমর্থনে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার কথাও তিনি স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের অপর প্রান্তে থাকা বিভিন্ন জেলার মানুষের কথাও শোনেন। 

রেলওয়ের ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-তারাকান্দি-জামালপুর-ঢাকা রুটে একজোড়া নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘জামালপুর এক্সপ্রেস’; ঢালারচর-পাবনা-রাজশাহী রুটে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ও ফরিদপুর রুটে ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের রুট বর্ধিতকরণ এবং চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের বহর পরিবর্তন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয় এ অনুষ্ঠান থেকে।