Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:12 pm

পুরোনো স্টেশনগুলো চালু করায় সরকারকে ধন্যবাদ

বর্তমান সরকারের আমলে রেলের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে এটি সুখবর। গণপরিবহনে একদিকে নৌপথের যেমন বিকল্প নেই, তেমনি সড়কপথে রেলের বিকল্প কিছু হতে পারে না। গড়পড়তায় একটি ট্রেন প্রায় ৩০টি বাসের সমপরিমাণ যাত্রী বহন করতে পারে। এ হিসাব শুধু বসে যাওয়া যাত্রীদের নিয়ে, দাঁড়িয়ে যাওয়াদের বাদ দিয়ে। টয়লেট সুবিধা, ঝাঁকুনিমুক্ত ভ্রমণ, খাবারের ব্যবস্থা ইত্যাদি তো রয়েছেই। ট্রেনের ভাড়াও বাসের চেয়ে কম। বর্তমান সরকারের আমলে ট্রেনের ভাড়া একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। তারপরও এর ভাড়া বাসের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। ট্রেনকে তাই গরিবের বাহনও বলা যেতে পারে। কম দুর্ঘটনার বিচারে ট্রেনের সঙ্গে একমাত্র পাল্লা দিতে পারে আকাশপথ। পরিবেশের দিক দিয়ে বিবেচনা করলেও ট্রেন এগিয়ে থাকবে। যদিও বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল অনেক আগে; কিন্তু গুরুত্ব বিচারে মাধ্যমটি অনেকটাই উপেক্ষিত থেকেছে। রেল সংস্কারে সরকারের সাম্প্রতিক নানা উদ্যোগ আমাদের মধ্যে এটুকু আশা জাগিয়েছে যে, প্রবল জনপ্রিয় এ মাধ্যমটি হারানো অতীত ফিরে পেতে চলেছে।
গত ১৭ মার্চ শেয়ার বিজে তেমনই একটি আশাজাগানিয়া খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বন্ধ থাকা ৬০টি রেলস্টেশন পুনরায় চালু হয়েছে। ১৬ মার্চ নরসিংদীর ঘোড়াশাল রেলস্টেশন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তার এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে একইসঙ্গে দেশের অন্যান্য এলাকায় বন্ধ থাকা ৬০টি রেলস্টেশনের কার্যক্রমও পুনরায় চালু হলো। আমরা রেলমন্ত্রী, রেল-সংশ্লিষ্ট অপরাপর ব্যক্তি ও সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। যে রেলস্টেশনগুলোর নাম শেয়ার বিজে প্রকাশিত হয়েছে, ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিচারে এর সবগুলো হয়তো উল্লেখযোগ্য নয়; কিন্তু রেল তো কেবল ব্যবসার জন্য নয়। এর অন্যতম দায়িত্ব মানুষকে সেবা দেওয়া। বিশেষত গরিবরা যদি তার বসবাসের কাছাকাছি স্টেশনে নামতে পারে, তাহলে যাতায়াতের খরচ অনেকটাই কমে, সময়ও বাঁচে। ট্রেন একই সঙ্গে ধনী-গরিব সবাইকে ভিন্ন ভিন্নভাবে সুবিধা দেয়। এটিও মনে রাখা প্রয়োজন সব স্টেশনে যদি সব ট্রেন থামে, তাহলে সুফলের বদলে কুফলই মিলবে বেশি। বিশেষত আন্তনগর ট্রেনগুলো যেন নির্দিষ্ট কিছু স্টেশনে থামে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক কারণে উপযোগিতা না থাকলেও অনেক স্টেশনে আন্তনগর ট্রেন থামানো হয়। রেল মন্ত্রণালয় সবধরনের রাজনৈতিক চাপমুক্ত থেকে যেন ট্রেন পরিচালনা করতে পারে। আমরা একই সঙ্গে সরকারকে অনুরোধ জানাবো, দেশের প্রতিটি রুটের ট্রেন যেন মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক নতুন কোচ ও লোকোমোটিভ এসেছে। ফলে কোচ সংকট কিছুটা হলেও কমেছে। এ সময় সৈয়দপুরের রেল কারখানায় পুরনো কোচগুলো ভালোভাবে মেরামত করা হোক। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যময় যাত্রাকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হোক রেলের যাবতীয় কর্মকাণ্ড।