নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশ সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সবচেয়ে দুঃখজনক ও ভয়াবহ কাণ্ড হচ্ছে, বৃহস্পতিবার আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের নেতা-কর্মীরা যখন দাঁড়িয়ে থাকে, তখন আমাদের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস এবং শেষে বন্দুক দিয়ে গুলিবর্ষণ করে।’
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। এ সময় বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিএনপির সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের হামলার অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বারবার বলে আসছি যে পুলিশের ভূমিকা হওয়া উচিত রক্ষা করা, পুলিশের ভূমিকা হওয়া উচিত নিরপেক্ষ থাকা। কিন্তু পুলিশ পুরোপুরিভাবে এই হামলাকারীদের তথা আওয়ামী লীগের ও সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে গণতন্ত্রকামী যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে তারা নস্যাৎ করার জন্য কাজ করছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই আক্রমণের ফলে আমাদের দলের অন্তত ৭৫ জন আহত হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে আটজন। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, এভাবে সন্ত্রাসী হামলা করে, আহত করে, জখম করে, হত্যা করে, গ্রেপ্তার করে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে কখনোই আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না, বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না।’
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে গতকাল পল্লবী জোনে আয়োজিত সমাবেশ শুরুর আগে আওয়ামী লীগের হামলার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পল্লবী জোনে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল ডি ব্লকের ঈদগাহ মাঠে। পুলিশ আপত্তি করার পর আমাদের নেতারা এর পরিবর্তে আরও দুটি জায়গার কথা বলেছিলেনÑপল্লবী পুরোনো থানার সামনে অথবা পল্লবী কাঁচাবাজারের সামনে মুকুল ফৌজ মাঠে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ মুকুল ফৌজ মাঠে বেলা ১টায় এই সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। যখন আমাদের কর্মী ভাইয়েরা মঞ্চ তৈরি করছিলেন, ঠিক তখনই এই হামলা চালানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, পুরোপুরিভাবে উসকানি দিয়ে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করা, বিরোধী দলকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া এবং নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য তারা এই কাজগুলো করছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী শক্তি, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের অধিকার হরণকারী শক্তি। আওয়ামী লীগ অতীতেও একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখনও তারা একই উদ্দেশ্যে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে আওয়ামী লীগ একই কায়দায় হামলা করেছে, একই কায়দায় মামলা হয়েছে, একই কায়দায় গুলি হয়েছে এবং একই কায়দায় আক্রমণ করেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর। সভা পণ্ড করা হয়েছে।’