নিজস্ব প্রতিবেদক: সমুদ্র অর্থনীতির সুফল পূর্ণভাবে পাওয়ার জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘যদি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করা না যায়, তবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ডিভিশন গঠন করা যেতে পারে সমুদ্র অর্থনীতির পূর্ণ সুফল পাওয়ার জন্য।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্যাটেজিক স্টাডিস (বিআইআইএসএস) আয়োজিত সমুদ্র অর্থনীতিবিষয়ক এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। সমুদ্র সম্পদ আহরণের জন্য সম্পদের অপ্রতুলতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এজন্য ব্লু বন্ড বাজারে ছাড়ার একটি পরিকল্পনা ছিল।’ আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমুদ্র অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক জাহাজ থাকতে হবে ও বন্দর উন্নত করতে হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খুরশেদ আলম বলেন, ‘চিটাগং বন্দরে বড় জাহাজ আসতে পারে না। কারণ এর নাব্য ৯.৫ মিটার। অন্যদিকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের গভীরতা হচ্ছে ১৪ থেকে ১৮ মিটার এবং সেখানে মোটামুটি বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে।’
১০ হাজার কোটি ডলার বাণিজ্যের জন্য জাহাজ ভাড়া দিতে হয় ৯০০ কোটি ডলারÑজানিয়ে খুরশেদ আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর পাঁচ হাজার জাহাজ আসে এবং এর মধ্যে মাত্র ৮২টি জাহাজ বাংলাদেশের।’ মাছ আহরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমুদ্র অর্থনীতির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কাজ করার ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান সমুদ্রের বিশাল এলাকার অব্যবহƒত সম্পদের ব্যবহারে ব্লু ইকোনমি বেল্ট গঠনের ওপর জোর দেন। বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি ও সমুদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারের ওয়ার্কিং সেশনে চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ‘ব্লু ইকোনমি অ্যান্ড ওশান গভর্ন্যান্স: বাংলাদেশ পারসপেকটিভ’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য ড. দেলোয়ার হোসেন ‘মেরিটাইম সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি ইন দি বে অব বেঙ্গল’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিআইআইএসএসের গবেষণা ফেলো মৌটুসী ইসলাম ‘নেক্সাস বিটুইন মেরিটাইম সিকিউরিটি অ্যান্ড ব্লু ইকোনমি: ইমপ্লিকেশন্স ফর বাংলাদেশ ইন পোস্ট-কভিড এরা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির ‘‘বাংলাদেশ’স ইকোনমিক প্রসপেক্ট ইন দি বে অব বেঙ্গল” শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবীর ওই সেশনে সভাপতিত্ব করেন।