প্রতিনিধি, যশোর: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, পৃথিবীর খুব কম দেশেই ইভিএম সিস্টেমে ভোট হয়। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ধারণা, তারা যে প্রতীকেই ভোট দিক না কেন, তা নির্দিষ্ট একটি প্রতীকে গিয়ে পড়বে। ইভিএম পদ্ধতি জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি।
গতকাল দুপুরে যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে ‘গণস্বাস্থ্য লেবুতলা হাসপাতাল’-এর নির্ধারিত স্থানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করি না বলেই গণস্বাস্থ্য কম পয়সায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না, যেমন ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা যায় না।
বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ খুবই অনটনের মধ্যে রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আগামী ঈদে তাদের কোনো আনন্দ থাকবে না। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে ২০ হাজার গরিব মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, আটা, তেল, আলু ইত্যাদি সরবরাহ করবে, যেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। সেক্ষেত্রে সরকারের প্রতি আহŸান থাকবে কম আয়ের এই দুই কোটি মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার।
চলতি বছর ৫৩ হাজার হাজি হজব্রত পালন করবেন। তিনি প্রত্যেক হাজির প্রতি অনুরোধ করেন, তারা যেন ১০ হাজার করে টাকা দান করেন। এতে করে ঈদে প্রায় ছয় লাখ মানুষের মুখে হাসি ফুটবে।
আগামী বাজেটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের বড় দেশ, তাই বাজেটের আকারও বড় হবে এটাই স্বাভাবিক। শুধু অপচয়টা কমাতে হবে। বিদ্যুৎ আজ ঘরে ঘরে, এটি সত্যি। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পেতেই পারেন। কিন্তু কুইক রেন্টাল কেন পুষতে হবে? এটি অপচয়।
তিনি বলেন, ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকেন; সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা গত ১৩ বছরে তার দলের নেতাকর্মীরাও তার কাছে পৌঁছাতে পারেননি। সে কারণে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের আওয়াজ তুলতে হবে। প্রদেশ হলেও মানুষ তার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে পারে।
এরপর বিকালে তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার কয়েলখালী গ্রামে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আরেকটি হাসপাতালের নতুন জায়গা পরিদর্শনে যান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে অন্যদের মধ্যে নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী ডা. মনজুর কাদের, লেবুতলা গ্রামের জমিদাতা মৃত শুভাংশু শেখর খাঁর স্ত্রী কল্পনা রাণী খাঁ ও মৃত অরুণ কুমার খাঁর স্ত্রী অরুণা রাণী খাঁ, গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শুভাংশু শেখর খাঁ ও তার ভাই অরুণ খাঁর পক্ষে তাদের স্ত্রীরা টিনশেড ঘরসহ ৫৫ শতক জমি হাসপাতালের অনুক‚লে গতকাল রেজিস্ট্রি করে দেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষে ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জমি গ্রহণ করেন।
