Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 8:53 pm

পেঁয়াজে শুল্ক অব্যাহতি কমানো হয়েছে চিনিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দাম নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক অব্যাহতি ও চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) কমানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। গতকাল এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সই করা পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহতির মেয়াদ থাকবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। চিনির নতুন শুল্কহার আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকবে।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহার, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম তেল ও চিনির শুল্ক কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওইদিন দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় এ অনুরোধ জানানো হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ জানানোর তিন দিনের মাথায় পেঁয়াজ ও চিনি আমদানির শুল্ক কমানো হলো।

এদিকে পূজার কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ কম আসা ও সেখানে দাম বাড়ার অজুহাতে সম্প্রতি দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম হুট করে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গত ১১ অক্টোবর বৈঠকে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান মোস্তফা বলেন, পূজার কারণে ভারত থেকে কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজ কম আসছে বলে জানতে পেরেছি। তাছাড়া ভারতেও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। এ কারণে আমাদের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, বাজারে দেশি ও আমদানি সব ধরনের পেঁয়াজের সরবরাহ কম। আর পণ্য কম থাকলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। গত বছর পেঁয়াজ আমদানি করে আমরা অনেক লোকসান গুনেছি। আমি শত শত কনটেইনার পেঁয়াজ আনি। কেজিতে দাম এক টাকা কমলেও আমাদের বিপুল লোকসান গুনতে হয়। গতবার ৭০ টাকা কেজি পেঁয়াজ আনার পর দাম পড়ে যায়। তাই এবার আমি কোনো এলসি খুলিনি। আমার মতো অনেকেই এবার পেঁয়াজ আমদানি করছে না বা কম আনছে।

জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে প্রতিদিন দুটি টিম ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ বাজার মনিটর করছে। সারাদেশে জেলা-উপজেলায় ডিসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সহায়তায় বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে সর্বোপরি পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সেপ্টেম্বরে পেঁয়াজ বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। টিসিবি সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন (মাসে ২০ থেকে ২৫ দিন) সারাদেশে

 ৪০০টি ট্রাকে ৪০০ থেকে এক হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রির কার্যক্রম চলমান রেখেছে। প্রয়োজনে ট্রাকপ্রতি পেঁয়াজ বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে।

এছাড়া পেঁয়াজের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য (চিনি, সয়াবিন তেল ও মশুর ডাল) নিয়মিত বিক্রি করছে টিসিবি। টিসিবি ঢাকায় ৮০ থেকে ৯৫টি ট্রাকের মাধ্যমে নিজেদের ট্রাকসেল কার্যক্রম চালাচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে ভারত ও তুরস্ক থেকে ১৫ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ এরই মধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে, যা থেকে বর্তমান বিক্রি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আরও পেঁয়াজ সংগ্রহের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।