পেঁয়াজ-তেল-চিনিতে শুল্ক কমানোর উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ, চিনি ও ভোজ্যতেলের সব ধরনের আমদানি শুল্ক আপাতত স্থগিত রাখতে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গতকাল দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠকে এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এখন পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত আছে। পাশাপাশি পেঁয়াজ আমদানির সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করছি এসব উদ্যোগের ফলে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’

ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভার্চুয়ালি অংশ নেন। ওই সময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য) এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) হাফিজুর রহমান, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, যেসব পণ্যের দাম নির্ধারণের সুযোগ আছে, তা নির্ধারণের মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে সব জায়গায় ইন্টারফেয়ার করা যায় না। এতে আরও সমস্যা হয়।’

বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় থাকা চাল, মুরগির মাংসসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত না হওয়ায় এসবের মূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পেঁয়াজের বাজার যতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এক মাস বাড়তি দাম থাকার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু আমাদের দেশে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত আছে, যা দিয়ে আগামী আড়াই থেকে তিন মাস চলতে পারে। তারপরও আমরা বিভিন্ন রকম শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি।

ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, পেঁয়াজের দাম বিশ্লেষণ করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে শুনেছি। দেখা গেছে, ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে অতি বৃষ্টির কারণে সেখানকার বাজারে দাম বেড়ে গেছে, যার প্রভাবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিছু দাম ভারতে বাড়ার জন্য এবং কিছু দাম বাড়ার আশঙ্কা থেকে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এরই মধ্যে চিঠি দিয়েছি। এনবিআরকে শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে আরও দুটি দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। পেঁয়াজ আমদানিতে পাঁচ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, গত বছর চার মাসের জন্য শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এনবিআরের কর্মকর্তাদের ইতিবাচক মনে হয়েছে। আশা করছি এবারও শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে।

তিনি বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে নতুন পেঁয়াজ আসবে। এর আগের একটি মাস হয়তো পেঁয়াজের দাম বেশি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে উল্লেখ করে বাণিজ্য সচিব জানান, আগামী এক মাস পেঁয়াজের দাম কিছুটা ‘নাজুক’ (বাড়তি) থাকবে। তবে এর মধ্যে আমাদের চেষ্টা থাকবে যৌক্তিক দাম যতটুকু বাড়া দরকার ততটুকুই যেন বাড়ে, এর মধ্যেই যেন সীমাবদ্ধ থাকে। আমরা আশা করছি, পরিস্থিতি এখন যেমন আছে, এর চেয়ে আর খারাপ হবে না। এখনকার এই নাজুক পরিস্থিতি হয়তো আগামী এক মাস ধরে চলবে।

সচিব জানান, চিনি আমদানিতে এসডি ও অগ্রিম শুল্ক রয়েছে। দুটোই প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট ও অগ্রিম শুল্ক রয়েছে, এক্ষেত্রে অগ্রিম শুল্ক প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। পেঁয়াজের শুল্ক চার মাসের জন্য প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

আইনের ক্ষমতাবলে চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে বাণিজ্য সচিব বলেন, তেলের বাজার স্বাভাবিক আছে। তবে চিনির দাম যেহেতু চার থেকে পাঁচ টাকা কমিয়ে আনা হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন। এছাড়া ডাল আমদানিতে কোনো শুল্ক নেই বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০