নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাব দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করেছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আর হঠাৎ করে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। এদিকে বাজারে বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, খিলগাঁও, শান্তিনগর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। যদিও পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আর আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে কারওয়ান বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। আর আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা।
দাম বাড়ার বিষয়ে পেঁয়াজের আমদানিকারক ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পেঁয়াজের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। ফলে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। ফলে দেশে পেঁয়াজ আমদানিও কমে গেছে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে, যার প্রভাব পড়ছে দামে। আগে যেখানে ভারতের মোকামগুলো থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯-১০ রুপি দরে কিনতেন, এখন তা ২১-২২ রুপিতে কিনতে হচ্ছে। এর সঙ্গে প্রতি কেজিতে পরিবহন খরচ যোগ হচ্ছে ৫-৬ রুপি করে।
অন্যদিকে বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। আর লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। গরুর মাংস বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি।
এদিকে ডিমের দাম কিছুটা কম থাকলেও আবারও বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে ডিমের ডজন ১০০ থেকে ১০৫ টাকা বিক্রি হয়েছে, সপ্তাহের ব্যবধানে তা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। আর প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা।
কারওয়ান বাজারে ব্যাংকার রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বাজারে শাকসবজির দাম এমনিতেই চড়া, ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। আর পেঁয়াজের দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।’
বাজারে সেই আগের মতোই পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। আর শিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। তারপরই দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গাজর, বরবটি ও উস্তে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আর প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। বেগুন, বরবটি ও চিচিঙা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আর গত সপ্তাহের মতোই ঢেঁড়স, শসা, ঝিঙে, ধুন্দল, কচুর লতি ও কচুর মুখি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। আর পটোল ও কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
বাজারে কম দামের তালিকায় রয়েছে মিষ্টি কুমড়া আর পেঁপে। প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। তবে কিছুটা দাম কমে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ বেশি হলেও বড় সাইজের ইলিশের দাম হাজার টাকার নিচে নামছে না। বড় সাইজের ইলিশ কিনতে গেলেই গুনতে হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা। আর একটু ছোট সাইজের বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর কেজিতে তিনটি হয় সেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। তবে কম নেই অন্যান্য মাছেও। বাজারে রুই, মৃগেল, কাতল ও সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। আর কৈ, পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি।

Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:17 pm
পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম
শেষ পাতা ♦ প্রকাশ: