Print Date & Time : 27 June 2025 Friday 8:35 pm

পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করল ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক: েবন্যায় ভারতের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হওয়ায় চলতি বছরে মৌসুমি পেঁয়াজ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই এ বছর ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের মূল্য বেশ চড়া। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সরকার রান্নার জন্য অতিপ্রয়োজনীয় এ উপাদানটির রফতানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গতকাল ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ওই ঘোষণা দেওয়া হয়। উৎপাদন ও মজুতের ঘাটতির কারণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশটির সরকার।
ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণবিষয়ক মুখপাত্র সীতাশু কর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রফতানিনীতির সংশোধন করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের পেঁয়াজ রফতানিতে এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।’
এর আগে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য দ্বিগুণের বেশি করেছিল ভারত। ওই নির্দেশনার মাধ্যমে মূল্য বাড়িয়ে ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে ভারতের কাঁচা পণ্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ন্যাপিড। যদিও ঘোষণার আগে ভারত থেকে টনপ্রতি ২৫০-৩০০ ডলার মূল্যে পেঁয়াজ আমদানি করা হতো। ওই ঘোষণার পরিণতিতে ভারত থেকে প্রায় তিনগুণ দামে পেঁয়াজ আমদানি করতে হতো বাংলাদেশকে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যেই ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণায় দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারত গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ রফতানিকারক দেশ। কিন্তু সম্প্রতি ভারতের বেশকিছু শহরে সবজির মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বছরের শেষে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন। তাই ভোগ্যপণ্য বিষয়ে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানাচ্ছে রয়টার্স।
এর আগে গত জুনে ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করলে রফতানিতে প্রদত্ত ১০ শতাংশ প্রণোদনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার। মূলত আগের বছরের মজুত থেকে এ বছর পেঁয়াজ সরবরাহের পরিমাণ কমা ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বপনে বিলম্ব হওয়ায় এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে দেশটি।
দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের বেশকিছু রাজ্যে চলতি বছর দ্বিতীয় দফায় টানা ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় অনেক আবাদি জমি প্লাবিত হয়েছে, ফলে পেঁয়াজের কাক্সিক্ষত উৎপাদন হয়নি। ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। আগামী অক্টোবরের শেষে নতুন ফসল ওঠা পর্যন্ত এ সংকট থাকবে।
এদিকে ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করে বাংলাদেশ। ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণায় নতুন উৎসের খোঁজে আমদানিকারকরা। এরই মধ্যে মিয়ানমারের পেঁয়াজ ঢাকার বাজারে আসতে শুরু করেছে। মিসর ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।