শেয়ার বিজ ডেস্ক: যাত্রীদেরকে পেজার (তারহীন যোগাযোগের যন্ত্র) ও ওয়াকিটকি বহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুবাইয়ের এমিরেটস এয়ারলাইন্স। গত মাসে লেবাননে দেশব্যাপী হিজবুল্লাহর যোগাযোগযন্ত্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণের প্রেক্ষাপটে গত শুক্রবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর: রয়টার্স।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমিরেটস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুবাইয়ে যাতায়াতকারী সব যাত্রীর জন্য পেজার ও ওয়াকিটকি বহন নিষিদ্ধ করা হলো। দুবাই থেকে, দুবাইয়ের উদ্দেশে কিংবা দুবাই হয়ে ভ্রমণকারী যাত্রীদের চেক ব্যাগেজ (প্লেনের কার্গো হোল্ডে রাখা ব্যাগ) কিংবা কেবিন ব্যাগেজে (কেবিনে যাত্রীর নিজের কাছে রাখা ব্যাগ) পেজার ও ওয়াকি-টকি বহন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হলো।
সেপ্টেম্বরে এক ভয়াবহ হামলায় হিজবুল্লাহ সদস্যদের হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরিত হয়। সেই ঘটনার পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের সদস্যদের পেজার ও ওয়াকিটকিসহ সব ধরনের যোগাযোগযন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাড়তি সতর্কতার জন্য যেকোনো নিষিদ্ধ বস্তু বাজেয়াপ্ত করবে দুবাই পুলিশ।মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম এই এয়ারলাইন আরও জানিয়েছে, ইরাক ও ইরানে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সব ফ্লাইট স্থগিত থাকবে। আর জর্ডানের ফ্লাইট রবিবার থেকে পুনরায় চালু হবে। এছাড়া, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও বৈরুত বিমানবন্দরের কাছে হামলার কারণে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত লেবাননে বিমান চলাচল স্থগিত থাকবে।
চলমান অস্থিতিশীলতার কারণে বৈরুত ও আঞ্চলিক কয়েকটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট স্থগিত করেছে আরও কয়েকটি এয়ারলাইন্স। এদিকে পেজার ও ওয়াকিটকি তৈরির কথা স্বীকার করছে না কোনো প্রতিষ্ঠান। তাইওয়ানভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলো বলেছে, হামলা ব্যবহার হওয়া পেজারগুলো তারা উৎপাদন করেনি। হাঙ্গেরিভিত্তিক কোম্পানি বিএসি এসব পেজার তৈরি করেছে, যাদের গোল্ড অ্যাপোলোর ব্র্যান্ড ব্যবহারের সনদ ছিল। এ নিয়ে তদন্ত শুরু হলে বুলগেরিয়ার নামও সামনে আসে। এর আগে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সোফিয়াভিত্তিক নরটা গ্লোবাল লিমিটেড এসব পেজার বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিএএনএস বলেছে, তর্কাতীতভাবে এটি প্রতিষ্ঠিত যে লেবাননে হামলা ব্যবহৃত পেজারগুলো বুলগেরিয়ায় আমদানি-রপ্তানি কিংবা এ দেশে তৈরি করা হয়নি।
পেজার বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্ত করছে লেবাননের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। লেবাননের একটি জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা সূত্র বলেছে, হিজবুল্লাহর কেনা পাঁচ হাজার পেজারের ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি তেল আবিব।