নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গতকাল পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা।
দুদকের অনুসন্ধান কমিটি গঠনের পরদিনই কমিটির কর্মকর্তারা আকস্মিকভাবে কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে গিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহসহ সংস্থার আরও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেন।
দুদকের অনুসন্ধান কমিটির তদারক কর্মকর্তা কাজী শফিকুল আলমের নেতৃত্বে অনুসন্ধান কমিটির প্রধান দুদকের উপ-পরিচালক শামসুল আলম, দুই সদস্য সহকারী পরিচালক এএসএম সাজ্জাদ হোসেন ও সহকারী পরিচালক এএসএম তাজুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কাজী শফিকুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা নিয়ে দুর্নীতির বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র চেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব নথিপত্র আমাদের সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
এদিকে দুদক সচিব মো. শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কয়লা দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নথিপত্র তলব করা হয়েছে। ওই অনুসন্ধান যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হয়, সে বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবীব উদ্দিন আহমদ ও অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এক লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। খনির কোল ইয়ার্ড থেকে কয়লা ‘উধাও’ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় খনির শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে প্রাথমিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কয়লা সরবরাহ না পাওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন রোববার রাতে বন্ধ হয়ে গেছে। ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ওই কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ থাকায় রংপুর বিভাগের আট জেলা বিদ্যুৎ সংকটে পড়ায় বিকল্প পথ খুঁজছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা নিয়ে দুর্নীতির খবর অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠনের পর গত সোমবার দিনাজপুর দুদক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি পরির্দশন করেন। পরিদর্শনের পর তদন্তে কয়লা ঘাটতির প্রমাণ মিলেছে বলেও জানিয়েছে পরিদর্শক দল। তদন্তের অংশ হিসেবেই এবার পেট্রোবাংলার কাছে তথ্য-প্রমাণ চাইতেই আলোচনা করেছে তদন্ত দল।