নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, উন্নয়ন কাজের জন্য পেনশন স্কিম থেকে সরকার ঋণ নেবে। ফলে বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রচলিত সঞ্চয় স্কিমের মতো মনে হলেও এটি পেনশন গ্রহীতাদের দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। পরিকল্পনামন্ত্রী গতকাল শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এফডিসি ভবনে ‘সামাজিক সুরক্ষায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট’ শীর্ষক ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের বৃদ্ধ অবস্থায় সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে। হিসাব-নিকাশ করে ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে জনস্বার্থে এই স্কিম শুরু করা হয়, যা বর্তমান সরকারের সাহসী উদ্যোগ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা অব্যাহত রেখেই উপকারভোগীরা পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারলে আরও ভালো হতো। সরকার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। যারা সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে নির্বাচনী তহবিল জোগানের উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, তাদের সেই সমালোচনা যথার্থ নয়। সরকার কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণা থেকে নাগরিকদের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে দুর্নীতি বেড়েছে সন্দেহ নেই। উচ্চবিত্ত পর্যায়ে দুর্নীতি বেশি হচ্ছে। এই দুর্নীতিবাজরা ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, দুবাইসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করছে। ব্যাংক খাতেও এই প্রভাবশালীরা অর্থ লুটপাটের ঘটনায় জড়িত। দু-একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলে নেয়া হলেও টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত আরও অনেককেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পেনশন স্কিম থেকে প্রাপ্ত অর্থ ঝুঁকিমুক্ত ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। আর্থিকভাবে শক্তিশালী বাণিজ্যিক ব্যাংক, ট্রেজারি বন্ড ও লাভজনক অবকাঠামোয় পেনশন স্কিমের টাকা বিনিয়োগ করা যেতে পারে। সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি, লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি যাতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তাবায়নে বাধা না হয়, সরকারকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক সুরক্ষায় সহায়ক হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক শেখ নাজমুল হক সৈকত, সাংবাদিক জাকির হোসেন ও স্থপতি সাবরিনা ইয়াসমিন মিলি।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
