পোর্টফোলিওতে ভালো মানের পাঁচ-ছয়টি শেয়ার থাকা উচিত

একজন বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে ভালো মানের কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি রাখা উচিত। এদের মধ্যে যদি কোনো একটি শেয়ারের দাম কমে যায় তবে অন্য কোম্পানির দাম বাড়লে ভারসাম্য বজায় রাখা যাবে। বর্তমানে পুঁজিবাজারের যে অবস্থা, ১০ বছর আগে পুঁজিবাজার আরও খারাপ অবস্থায় ছিল। দেশের পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম যে হারে ওঠানামা করে এটা আসলেই কাম্য নয়। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আহসান উল্লাহ এবং ওয়ান সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও আমিনুল ইসলাম।
আহসান উল্লাহ বলেন, সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে বর্তমানে পুঁজিবাজার যে অবস্থানে রয়েছে এটাকে ভালো বলা যায় না। বাজার যখন নি¤œগতিতে বা একটু স্থির অবস্থায় থাকে তখন মৌলভিত্তি ও মধ্যম মৌলভিত্তির কোম্পানির গতি কম থাকে কারণ তখন ট্রেড ভলিউম কমে যায় এবং কিছুটা তারল্য সংকট দেখা দেয়। অপরদিকে স্বল্পমূলধনি এবং জেড ক্যাটেগরির কোম্পানির শেয়ারের দাম ও গতি বেড়ে যায়। এটি অতীতে ছিল বর্তমানেও বিরাজমান। গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সূচক প্রায় ১০০০ পয়েন্ট পড়েছে অর্থাৎ বাজার ৫০ শতাংশ পতিত হয়েছে। তবে বর্তমানে পুঁজিবাজার যে অবস্থানে আছে তাতে দেখে, শুনে, বুঝে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফা হবে এমনটা আশা করা যায় এবং নির্বাচনের পর পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে যাবে বলে আমার ধারণা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় নজরে রাখতে হবে। কারণ অনেক সময় ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস কাজ করে না। তখন ওই পদ্ধতির পাশাপাশি টপ ২০ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থাকলে সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর সুবিধা হবে।
তিনি বিনিয়োগকারীর উদ্দেশে বলেন, বিনিয়োগের লাভ-ক্ষতি বিনিয়োগকারীকেই বহন করতে হবে। তাই বিনিয়োগকারীকে দেখে, শুনে, বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে দুটি পদ্ধতি জানতে হবে। একটি হচ্ছে ফান্ডামেন্টাল অপরটি হচ্ছে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস। অর্থাৎ ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে ৩০ থেকে ৪০টি ভালো মানের কোম্পানি বাছাই করা। এখন দেখতে হবে ওইসব কোম্পানির শেয়ারের দাম কত। ওইসব কোম্পানি ফান্ডামেন্টালের দিক থেকে শক্তিশালী হলেও অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম অতিমূল্যায়িত। অবশ্যই ওখানে ঝুঁকি রয়েছে। তখন ওইসব কোম্পানিতে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ সামনে তিন মাসে বা এক বছরে ওইসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে কি ধরনের লাভ হতে পারে। দেশের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীর বড় সমস্যা হচ্ছে আবেগ। এখানে ছোট ও বড় সবই বিনিয়োগকারীর মধ্যে কম-বেশি আবেগ কাজ করে। যখন একটি কোম্পানি শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে তখন বিনিয়োগকারীরা না বুঝে ওইসব শেয়ারে বিনিয়োগ করে আবার যখন কোনো শেয়ারের দাম কমতে থাকে তখন না বুঝেই বিক্রি করে দেন। এখানেই বিনিয়োগকারীদের সমস্যা।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোনো বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিওতে ভালো মানের কম পক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি রাখা উচিত। কারণ এদের মধ্যে যদি কোনো একটি শেয়ারের দাম কমে অন্য কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লে একটি ভারসাম্য বজায় রাখা যাবে। এটাই হওয়া উচিত। বর্তমানে পুঁজিবাজারের যে অবস্থা অর্থাৎ ১০ বছরের আগে পুঁজিবাজার আরও খারাপ ছিল। দেশের পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম যে হারে ওঠানামা করে এটা আসলে কাম্য নয়। তবে ২০১০ সালের ধসের পর পুঁজিবাজারে পলিসিগতভাবে অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে ও বাজারের অনেক উন্নয়ন হয়েছে এবং আরও উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। এটি দ্রুত সম্ভব নয় তবে ধীরে ধীরে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০