পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের ডাভোস শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ৪৭তম বার্ষিক সম্মেলনে ‘শেপিং এ নিউ ওয়াটার ইকোনমি’ শীর্ষক কর্মশালায় এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের অবদান বিশাল। এ শিল্পে শ্রমিকের অধিকার, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, মানোন্নয়নসহ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। খবর বাসস।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতে মূল বেতন ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্লোবাল ব্র্যান্ড ও রিটেইলারদের সুপারিশের ভিত্তিতে ৩ হাজার ৭৮০টি কারখানার সবগুলোর সমীক্ষা শেষ হয়েছে। আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারখানাগুলো বর্তমানে গ্লোবাল ব্র্যান্ড ও রিটেইলারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি কারখানায় পেশাগত নিরাপত্তা কমিটি রয়েছে, যেখানে শ্রমিক ও কর্মচারীরা একসঙ্গে কাজ করছেন।’

‘বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে ৪৫ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছেন এবং তাদের ৮০ শতাংশই নারী। মোট রফতানির ৮৩ শতাংশ এই শিল্প খাতের’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এই শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে বাংলাদেশের ৩৮টি কারখানার এলইইডি সনদপত্র রয়েছে। বিশ্বের ১০টি শীর্ষস্থানীয় পরিবেশবান্ধব কারখানার মধ্যে ৭টি রয়েছে বাংলাদেশে। এ খাতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী দূষিত পানি শতভাগ শোধন ও পানি ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার ‘২০৩০ ওয়াটার রিসোর্স গ্রুপে’র (ডব্লিউআরজি) সঙ্গে কাজ করছে।

এজন্য দূষিত পানি পরিশোধনে বড় অঙ্কের অর্থের ব্যবস্থা করা, আর্থিক ও অর্থবহির্ভূত প্রণোদনা দেওয়া, সমগ্র বাংলাদেশে পানির ব্যবহারের লক্ষ্যে মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো

উন্নত করা, পানি শাসনের জন্য বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করাক্সএ পাঁচটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

পানিসম্পদ সংকট বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ২০০৮ সালে ‘২০৩০ ওয়াটার রিসোর্স গ্রুপ’ গঠন করা হয়। এর সদস্যদের মধ্যে রয়েছে ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ ও ব্যবসায়িক অংশীদারদের একটি কনসোর্টিয়াম: দ্য ব্যারিল্লা গ্রুপ, কোকা-কোলা কোম্পানি, নেসলে এসএ, নিউ হল্যান্ড এগ্রিকালচার, এসএবি মিলার পিএলসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এবং সিনজেন্টা এজি।

বক্তব্যে দেশের শিল্পায়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও কলকারখানায় ‘এ ফ্লুয়েন্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বড় বড় গৃহনির্মাণ কোম্পানিকে বর্জ্য শোধনের জন্য যে কোনো শিল্প স্থাপনের সময় ইটিপি নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সবার জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবার জন্য নিরাপদ পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার উদ্ভাবনী শক্তির সন্নিবেশ ঘটিয়ে খরা ও লবণাক্ততাসহিষ্ণু জাতের খাদ্যশস্য আবাদের উদ্যোগ নিয়ে দেশের সার্বিক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে। দেশে এমন জাতের সবজির চাষ হচ্ছে, যা উৎপাদনে পানির প্রয়োজন কম পড়ে।

ওয়ার্ল্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু স্টিয়ারের সঞ্চালনায় এ কর্মশালায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশ নেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০