Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 12:21 pm

পোশাক খাতে চূড়ান্ত করহার কমছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের আয়কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে উৎসে কর কমানোর বিষয়ে এ খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি সত্ত্বেও তা অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের নিয়মেই শূন্য দশমিক সাত শতাংশ উৎসে কর থাকছে পোশাক খাতে।

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ‘দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তৈরি পোশাক খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক প্রতিকূল বাজার পরিস্থিতিতে এ খাত বিভিন্ন চাপের মুখে আছে এবং উৎসে কর প্রত্যাহারসহ নগদ সহায়তা দাবি করছে। গুরুত্ব বিবেচনায় এ খাতকে আমরা সব সময় নানাবিধ প্রণোদনা ও বিশেষ কর সুবিধা দিয়ে আসছি। তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রফতানিতে নিয়োজিত করদাতারা বর্তমানে শূন্য দশমিক সাত শতাংশ হারে উৎসে কর দেন। এছাড়া তারা হ্রাসকৃত ২০ শতাংশ হারে আয়কর দিচ্ছেন। আগামী অর্থবছর আয়করের হার আরও হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।’

উল্লেখ্য, এর আগে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সংকটের কথা উল্লেখ করে এ খাতে নগদ প্রণোদনাসহ নানা সুবিধার দাবি করে আসছিলেন। এ খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান সম্প্রতি প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, ‘গত দুবছরে গ্যাস সংকটসহ নানাবিধ কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৮ শতাংশ। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমরা ক্রমেই সক্ষমতা হারাচ্ছি। এছাড়া পোশাক খাতের গত ১০ বছরের রফতানি প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ থেকে কমে দুই দশমিক ২১ শতাংশ হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য প্রতিযোগী দেশে এ খাতে বিপুল নগদ সহায়তাও দিচ্ছে।’

এসব নানা সংকট তুলে ধরে খাত-সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা বলেছিলেন, সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় পোশাক রফতানির উপর উৎসে কর আগামী দুবছরের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হোক। তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য করপোরেট করহার ২০ শতাংশের পরিবর্তে আগের মতো ১০ শতাংশ করা এবং তা আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখার প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া আগামী দুবছরের জন্য পোশাক রপতানির এফওবি মূল্যের ওপর প্রচলিত সুবিধাগুলোর অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা চান তারা। এসব দাবির মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ১৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে রফতানিমুখী পোশাক খাতের করপোরেট কর ১০ শতাংশ ছিল। এ প্রসঙ্গে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী শেয়ার বিজকে বলেন, বিজিএমইএর দাবিগুলো ছিল পোশাক খাতের বৈশ্বিক বাস্তবতা মাথায় রেখেই। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এ দাবিগুলো আমলে নেওয়া যেতে পারে। উৎসে কর মওকুফ করে যে অর্থ সরকারের ক্ষতি হবে, তার চেয়ে বেশি লাভ হবে দেশের সার্বিক প্রবৃদ্ধি দুই সংখ্যায় উন্নীত হলে। সেটি এ খাতের বিকাশের মাধ্যমেই সম্ভব।