Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:31 am

পোশাক রপ্তানিকারকদের সাত দিনের বন্দর ডেমারেজ মওকুফ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে পোশাক রপ্তানিকারকদের সাত দিনের বন্দর ডেমারেজ চার্জ মওকুফ (পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে চার্জ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংঘাতের কারণে ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে গতকাল রোববার সচিবালয়ে বৈঠকের পর নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

এ সময় নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের দাবি রয়েছে। এগুলো কিছু আছে এনবিআর, কিছু অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত, কিছু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত। সেগুলো তারা আমাকে অবহিত করেছে। সেই বিষয়গুলো সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আমার কাছে যেটুকু সামর্থ্য আছে সেইটুকু আমি করতে পারি। এর বেশি করতে হলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেÑজানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সড়ক, রেল ও নৌ-যোগাযোগ, আকাশপথ সবই উন্নত হয়েছে। আমরা বলেছিলাম ব্যবসায়ীরা যদি আমাদের কাছে কোনো সহযোগিতা চায় আমরা করব।

খালিদ মাহমুদ বলেন, বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, তাদের যে তালিকা আছে সেটা যদি আমাদের দেয়া হয়, তাহলে আমরা সর্বোচ্চ সাতদিনের ডেমারেজ চার্জ মওকুফ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে যদি আমাদের তালিকটা দেয়, তাহলে আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। ইন্টারনেট বন্ধ ও সহিংসতার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ থাকায় কনটেইনারবাহী গাড়িগুলো আসতে পারেনি, আটকে গিয়েছিল। এ কারণে চট্টগ্রাম বন্ধরে কনটেইনারের জট লেগে যায় বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীকে দেয়া দাবিতে বলা হয়েছে, দেশে চলমান সংকটাপন্ন অবস্থা ও কারফিউ এবং বন্দর ও কাস্টমসের সার্ভারে অনলাইন সংযোগ না থাকা/ধীরগতি থাকার কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য খালাস করতে সক্ষম হয়নি। বর্তমানে বন্দর ও কাস্টমসের সার্ভার চালু হওয়ার ফলে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে উল্লিখিত কারণে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার কারণে বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে কনটেইনার জট এবং আমদানিকারকদের ওপর ধার্য হয়েছে অতিরিক্ত ডেমারেজ চার্জ।

দাবিতে বলা হয়, বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে সম্পাদন এবং ক্রেতার নির্ধারিত লিড টাইমের মধ্যে পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা করতে তৈরি পোশাক খাতের অপেক্ষমাণ কনটেইনার দ্রুততার সঙ্গে পোর্ট ডেমারেজ চার্জ ছাড়া খালাসের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৩৭ হাজার আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার খালাসের অপেক্ষায় আছে, এর মধ্যে ১৩ হাজার কনটেইনার তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট। এছাড়া এরই মধ্যে ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার পোর্ট ডেমারেজ চার্জ তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকদের ওপর ধার্য হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বৈঠকে বিজিএমইএ’র সভাপতি এস এম মান্নান কচিসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।