পৌর মেয়রসহ ৭ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পৌর মেয়রসহ ৭ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব মেয়র কাউন্সিলরেররা ত্রান বিতরণে হতদরিদ্রদের না দিয়ে নিজেদের পছন্দমত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করার।

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তা হিসাবে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভা এলাকায় বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণ বিতরণের এ গুরুত্বর অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বিশেষ শাখার অনুসন্ধানে।

অনুসন্ধানে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ধরা পড়া ওয়ার্ডগুলো হলো- ১, ২, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (চ:দা:) মুহাম্মাদ আবদুর রহমান গত ২৫ এপ্রিল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের জেলা বিশেষ শাখার প্রতিবেদনের আলোকে কুমারখালী পৌরসভায় বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠি দিয়েছে।

জানা গেছে, চলমান করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সরকার কর্তৃক ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কুমারখালী পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বরাদ্দকৃত ১৩৫০ প্যাকেট ত্রাণ (প্রতি প্যাকেটে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ৩ কেজি আলু ও ১টি সাবান) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা পৌরসভার মেয়রের নিকট থেকে গ্রহণ করেন। ওই ত্রাণসামগ্রী কাউন্সিলররা ১ থেকে ৩ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের গরিব, অসহায় ও দুস্থ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করে।

কিন্তু ত্রাণ বিতরণের কয়েকদিন পরই পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের জেলা বিশেষ শাখার গোপন অনুসন্ধানে জানা যায়, পৌর ১, ২, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডগুলোতে তালিকায় নাম থাকা গরিব, অসহায় ও দুস্থ হতদরিদ্র ব্যক্তিরা ত্রাণ সামগ্রী পায় নি এবং মাষ্টাররোলে টিপসই বা স্বাক্ষর দেন নাই।

অথচ মাষ্টাররোলে তাদের প্রত্যেকের নামের পাশে টিপসই ও স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। সংযুক্ত তালিকার দুস্থ ও অসহায় মানুষের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি ত্রাণসামগ্রী বিতরণে ওয়ার্ড কাউন্সিলররা পৌরসভার মেয়রের যোগসাজশে অনিয়ম করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্সিলর জানান, আমরা কাউন্সিলররা কেউ ৯১টি, কেউ ৯৮টি এবং কেউ তার চেয়েও কিছু বেশি নাম দিয়েছি। আর অবশিষ্ট নাম দিয়েছেন মেয়র নিজেই। কিন্তু আমাদেরকে (কাউন্সিলর) মাষ্টাররোলে স্বাক্ষর দিতে হয়েছে।

পৌর নাগরিকদের অনেকেই বলেছেন, এ বিষয়টি সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। ইতোমধ্যে এই অনিয়ম ঢাকতে ওএমএস’র অজুহাত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র মো. সামছুজ্জামান অরুণ বলেন, সরকারি ত্রাণসামগ্রী বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি।

যারা ত্রাণ পায়নি তাদের নাম ওএমএস’র তালিকায় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাষ্টাররোল প্রস্তুতের আগে তাদের নাম সংশোধন করা হয়নি, এটাই ভুল হয়েছে। আর এই বিষয়টি জেলা প্রশাসক সাথে আলোচনা করেই করা হয়েছিল।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি জেলা কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০