শেয়ার বিজ ডেস্ক : ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পরিকল্পিতভাবে ভয়াবহ বন্দুক ও বোমা হামলায় ১৩০ জনকে হত্যার দায়ে ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন দেশটির আদালত। রায়ে একজনকে আমৃত্যু সাজা দেয়া হয়। স্থানীয় সময় বুধবার বিচারক জ্যঁ লুই পেরি এ রায় দেন। আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আবদেসলাম মামলায় প্রধান সন্দেহভাজন আসামি। বাকি সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামির মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন। খবর বিবিসি
তথ্য অনুযায়ী প্যারিসে যে দলটি ভয়াবহ এ হামলা চালিয়েছিল, তাদের একমাত্র জীবিত সদস্য বেলজিয়ামে জন্ম নেয়া ফ্রান্সের নাগরিক আবদেসলাম। রায়ে সন্ত্রাসবাদ ও খুনের অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদÐ দেয়া হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভয়াবহ এ ঘটনার বিচারকাজ শুরু হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক হামলা মামলার শুনানিতে অংশ নিতে ৯ মাসের বেশি সময় ধরে প্যারিসের বিশেষ আদালতে হাজির হন ভুক্তভোগী, সাংবাদিক ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর কয়েকটি বার-রেস্তোরাঁ, জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে সংগীত অনুষ্ঠানে হামলায় কয়েকশ মানুষ আহত হয়।
বিচারের শুরুতে আবদেসলাম নিজেকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ‘সেনা’ হিসেবে দাবি করেন। পরে তিনি হতাহতদের কাছে ক্ষমা চেয়ে দাবি করেন তিনি খুনি নন। খুনের অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করাটাও হবে অন্যায়।
আবদেসলামের আমৃত্যু কারাদÐের অর্থ হলো ৩০ বছর কারাবাসের পর প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ খুবই কম। ফ্রান্সে কঠোরতম সাজা হলো আমৃত্যু কারাদÐ। দেশটির আদলতে এ ধরনের সাজার ঘটনা বিরল।
হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এডিথ সিউরাত রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ রায়ে বেদনা উপশম করেনি। তিনি সন্তুষ্ট নন।
বিবিস জানায় হামলায় জড়িতদের মধ্যে মোহামেদ আবরিনিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। ৩৭ বছরের এই আসামিকে ২২ বছর কারাভোগ করতে হবে। হামলাকারি কয়েকজনকে গাড়ি চালিয়ে প্যারিসে আনার কথা স্বীকার করেন তিনি।
হামলার সমন্বয়কারী মরক্কো বংশোদ্ভত বেলজিয়ামের নাগরিক মোহামেদ বাক্কালিকে ৩০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। তিনি বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে বাসা ভাড়া করে দিয়েছিলেন হামলাকারীদের। সুইডেনের নাগরিক ওসামা ক্রায়েম ও তিউনিসিয়ার নাগরিক সোফিয়েন আরারিকে ৩০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তারা পরস্পর যোগসাজসে আমস্টারডাম বিমান বন্দরে আলাদা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। মোহাম্মদ উসমানও আদেল হাদ্দাদিকে ১৮ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।