প্রকল্পে দুর্নীতি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না বলে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী প্রতিটি প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করতে এবং ব্যয় বৃদ্ধি যাতে না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। বড় অবকাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণের প্রকল্পে কাজের ধীরগতিতে ব্যয় বৃদ্ধি স্বাভাবিক। কোনো প্রকল্প যখন পাস হয়, তখন নির্মাণসামগ্রী পরিবহনব্যয়, কর্মীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ের সম্ভাব্য হিসাব ধরে প্রকল্পব্যয় নির্ধারণ করা হয়।

কাজে ধীরগতি দীর্ঘসূত্রতায় পর্যবসিত হলে ব্যয় অনেক বাড়ে। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হতে ১০ বছর লেগে যাওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম, পরিবহন খরচ ও কর্মীদের বেতন-ভাতা এক জায়গায় থাকেনি। বছর বছর তা বরং বেড়েছে। এতে নির্মাণব্যয় বেড়ে গেছে। এমন অবস্থায় পরিকল্পনামন্ত্রীর নির্দেশনার পুরোপুরি পরিপালন করা গেলে প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম হওয়ার কথা নয়।

যতগুলো প্রকল্প শেষ হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে কত দিন লেগেছে প্রকল্পের সংশোধন, ব্যয় বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়সহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে আইএমইডিকে নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি জনসম্পৃক্ততা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প বাছাই ও বাস্তবায়নের ওপর নজর রাখার পরামর্শ দেন।
নির্মাণকাজ চলাকালেই অনেক প্রকল্পে খরচ বাড়ে না; মূল অবকাঠামোর নির্মাণ শুরুর আগেও খরচ বাড়ে। কোনো কোনো প্রকল্পের নির্মাণকাজ একাধিকবার উদ্বোধনেরও দৃষ্টান্ত আছে। আবার মাঝেমধ্যে অসমাপ্ত রেখেই শেষ করা হয় নির্মাণকাজ।

দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির খবর সবার জানা। কিন্তু তা যে আমাদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে পারেনি, সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কারণ একই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটে চলেছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতায় দেশের কী পরিমাণ অর্থ অপচয় হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য নেই। তবে এটি যেনগণ্য নয়, তাতে সন্দেহ নেই। যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রকল্পে নির্মাণব্যয় বেড়ে যাওয়া থামাতে কঠোরব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেই আমরা মনে করি। প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনাও জরুরি।

কোনো নির্মাণপ্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় হবে বা ওই স্থাপনার সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিবছর রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ ব্যয় হবেÑএটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। ব্যয় কমাতে রেলে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি বন্ধ হবে। আমাদের প্রত্যাশা, বর্তমান প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় বন্ধ করা হবে এবং নতুন কোনো প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় যাতে না হয়, তাও নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিদেশি সহায়তা নিতে গেলে সমীক্ষা লাগে, শর্ত পূরণ করতে হয়। সেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকলে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছেও ইতিবাচক বার্তা যায় না। নিবিড় সমীক্ষাপূর্বক কোনো প্রকল্প নেয়া হলে রাষ্ট্রীয় অর্থ গচ্চা যাওয়ার আশঙ্কা কমবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০