Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:13 am

প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে জেসন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৩ ডিসেম্বর দৈনিক শেয়ার বিজ কড়চার প্রথম পাতায় ‘আইপিওতে আসার আগে বন্ধ জেসন ফার্মাসিউটিক্যাল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ৭ ডিসেম্বর কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম মল্লিকের সই করা প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বতর্মানে জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবসা বন্ধ আছে, যা সম্পূর্ণ অসত্য। এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে পত্রিকার কোনো সাংবাদিক বা প্রতিবেদক কোম্পানির দায়িত্বে নিয়োজিত মূল ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম মল্লিকের সঙ্গে বা অন্য কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি। প্রতিবেদক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমা সেলিমের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে কোম্পানির সাবেক পরিচালক আজরা সেলিম ও জিনাত সেলিম, কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম উল্লাহ, চেয়ারম্যান এনাম মল্লিক এবং পরিচালক নাফিজা সেলিমকে ২০১৮ সালে ভুল তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রভাবিত করে জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে প্রাইভেট থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর এবং লিস্টেড কোম্পানি হিসেবে আইপিও ইস্যুর করপোরেট উপদেষ্টা হিসেবে সম্পৃক্ত করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা নেয়া হয়। যদিও আইপিও ইস্যুর ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে কোম্পানি বিএসইসি থেকে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির জন্য অনুমতি নেয়। এই অনুমতি কোনোভাবেই আইপিও ইস্যু বা প্লেসমেন্ট শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগ গ্রহণের আইনগত ভিত্তি হতে পারে না।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, সাবেক পরিচালক আজরা সেলিম ও জিনাত সেলিম এই অনুমতিকে আইপিও ইস্যুর হিসেবে চালিয়ে দিয়ে কোম্পানিকে পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তর ও প্রাইভেট প্লেসমেন্ট শেয়ারের বিপরীতে টাকা গ্রহণে প্রভাবিত করেন। বিষয়টি তদানীন্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম উল্লাহ, চেয়ারম্যান এনাম মল্লিক এবং পরিচালক নাফিজা সেলিমের গোচরীভূত হওয়ার পর ২০২১ সালে বিষয়টি বোর্ডে উপস্থাপন করেন এবং আইপিও ইস্যুর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়।

অন্যদিকে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকার জন্য আজরা সেলিম ও জিনাত সেলিমের পরিচালক পদ বাতিল করা হয়। এর বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্ট ডিভিশনে কোম্পানি ম্যাটার নং ২৯৮ অব ২০২০ দায়ের করেছেন, যা এখনও বিচারাধীন। অন্যদিকে তারা প্লেসমেন্ট শেয়ার গ্রহণকারীদের বিশেষত আইডিএলসির যোগসাজশে কোম্পানির বোর্ড গঠনের জন্য একটি বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টা চালান। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম মল্লিক হাইকোর্ট ডিভিশনে কোম্পানি ম্যাটার নং-২৬০ অব ২০২৩ দায়ের করেছেন। সেই মামলায় বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরই মধ্যে এনাম মল্লিক মরহুম মো. সেলিম উল্লাহর সব ওয়ারিশের নামে সাকসেশন সনদ ইস্যুর জন্য ঢাকার তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ এবং ডিস্ট্রিক্ট ডেলিগেট আদালতে সাকসেশন মোকদ্দমা নং-২১১৭/২০২৩ দায়ের করেছেন। এ পরিস্থিতিতে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে ‘আইপিওতে আসার আগে বন্ধ জেসন ফার্মাসিউটিক্যাল’ শিরোনাম-সংবলিত ভুল তথ্য-উপাত্ত-সংবলিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম পুরোদমে অব্যাহত আছে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মোট বিক্রির পরিমাণ ছিল আট কোটি আট লাখ ৭৮ হাজার ৭৮৬ টাকা। পক্ষান্তরে সরকারকে আয়কর ও অন্যান্য বাবদ এক কোটি ৭৭ হাজার ৮১৭ টাকা প্রদান করা হবে। এর আগে অক্টোবর মাসে মোট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ৩৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৮ টাকা। পক্ষান্তরে সরকারকে আয়কর ও অন্যান্য বাবদ এক কোটি ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৭০ টাকা পরিশোধ করা হয়।

প্রতিবেদকের বক্তব্য: জেসন ফার্মাসিউটিক্যাল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আইডিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়। এর ধারাবাহিতায় প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বিক্রির জন্য কমিশন থেকে কনসেন্ট লেটার নেয়া হয়। প্রতিটি শেয়ার ১৬ টাকা প্রিমিয়ামে বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে ৩৭ কোটির বেশি টাকা উত্তোলন করে। ২০১৯ সালে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থেকে পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তরিত হয়। আর ২০২১ সালে আইপিওর আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে কমিশন চিঠি দিয়েছিল। এ ধরনের একাধিক নথিপত্র প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। আইডিএলসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।