রানী ক্লিওপেট্রা, সম্রাট আলেকজান্ডার, বাদশাহ সোলায়মান, নেপোলিয়ন, ক্রিস্টোফার কলম্বাস ও মহাত্মা গান্ধীর মতো বিখ্যাত মানুষরা অ্যালোভেরা ব্যবহার করতেন। ত্বকের যতেœ তারা অ্যালোভেরার ওপর নির্ভর ছিলেন।
অ্যালোভেরা আমাদের কাছে ঘৃতকুমারী নামে পরিচিত। এ গাছ দেখতে অনেকটা কাঁটাওয়ালা ফণীমনসা বা ক্যাকটাসের মতো। তবে এটি দেখতে ক্যাক্টাসের মতো হলেও ক্যাক্টাস নয়। এটি লিলি পরিবারের উদ্ভিদ এটি পেঁয়াজ বা শাপলা-পদ্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা বর্শাকৃতির লম্বা, পুরু ও মাংসল। পৃথিবীতে প্রায় ২৫০ ধরনের অ্যালোভেরা জন্ম। তবে মাত্র দুই ধরনের অ্যালোভেরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়।
বেশিরভাগ আই মেকআপ রিমুভার রাসায়নিক ও প্যারাফিন সমন্বয়ে গঠিত। যা ত্বককে শুষ্ক করে ও স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে। যাদের সংবেদনশীল ত্বক রয়েছে কিংবা যারা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাদের এ ধরনের পণ্য ব্যবহার না করাই ভালো। বরং বিশুদ্ধ অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে চোখের মেকআপ তুলে ফেলুন। এতে কোনো যন্ত্রণা হবে না।
অ্যালোভেরা জেল শেভিং ক্রিম হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও ময়েশ্চারাইজিং উপাদানসমৃদ্ধ এবং শেভের জন্য ভালো। ফেনা হওয়ার জন্য জেলের সঙ্গে হাত ধোয়ার সাবান ও কয়েক ফোঁটা ‘ভিটামিন ই’ অয়েল মিশিয়ে নিন। ওই মিশ্রণ ফ্রিজে রাখলে ছয় মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
অ্যালোভেরা জেল ব্রণ বা মেছতার দাগ দূর করে। ত্বককে আর্দ্রতা এনে তারুণ্যদীপ্ত করে। এজন্য এক থেকে দুটি অ্যালোভেরা পাতার অর্ধেক জেল বের করে নিন। সঙ্গে সামান্য এসেনশিয়াল অয়েলও মিশিয়ে নিতে পারেন। এরপর জেল মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ত্বক পরিচর্যায় অ্যালোভেরা অত্যন্ত চমৎকার স্ক্র্যাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি ত্বক নরম করে, কোষে অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে টিস্যুকে শক্তিশালী করে। এক থেকে দুই কাপ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ব্রাউন সুগার বা বেকিং সোডা মিশিয়ে দানাদার মিশ্রণ তৈরি করুন। ওই মিশ্রণ আপনার কনুই, গোড়ালি, বাহু ও মুখে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
শীতে ত্বক ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে অলিভ অয়েল ও মধু মিশিয়ে ফাটা ত্বকে লাগান। এতে শুধু ত্বকের আর্দ্রতাই ফিরবে না, বরং ইনফেকশন থেকেও ত্বক রক্ষা পাবে। খুশকি ও একিজিমা দূর করতেও অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকর।
শ্বাসনালির ইনফেকশন ঠেকাতে ভূমিকা রাখতে পারে অ্যালোভেরা জেল। কারণ এতে অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদানও বিদ্যমান। সমপরিমাণ মধু ও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে খেলে গলা ব্যথা ও সাইনোসাইটিস দূরে থাকবে। শীতে পাকস্থলীর জটিলতা ও বদহজমের সমস্যা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস অ্যালোভেরার জুস পান করতে পারেন। এটি হজমে সহায়ক। আথ্রাইটিসের ব্যথা কমানোর জন্যও কার্যকর।
অ্যালোভেরা জেলে ‘পলিসেকারাইড ফাইবার’ নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যা হজমে সহায়তা করে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিতে পারে। ওই ফাইবার ক্ষত বন্ধ ও কেটে যাওয়া অংশের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে অ্যালোভেরার বিকল্প মেলা ভার।