নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের মানুষের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে প্রচলতি রাজনীতি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।
তারা বলেছেন, আজকে যে শাসন ব্যবস্থা রয়েছে, শাসক দল রয়েছেÑএসব ক্ষেত্রেও পরিবর্তন প্রয়োজন রয়েছে। ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার মতোই বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। এর পরিবর্তে স্বাধীন দেশের ব্যবস্থাপনা আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেই লক্ষ্যে আজকে প্রয়োজন সব দল, মত, শ্রেণি-পেশার ঐক্যবদ্ধ শক্তির মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে নগর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস-বিএলএফের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খানের ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। অসুস্থতার কারণে আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি সিরাজুল আলম খান।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, রাজনীতিবিমুখতার বিপরীতে রাজনীতি সৃষ্টি করেছেন সিরাজুল আলম খান। আজকে তার এখানে আসার কথা ছিল, কিন্তু অসুস্থতার কারণে এখানে আসতে পারেননি। ছাত্রজীবনে আমরা দুজন দুই মেরুর লোক ছিলাম। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো জাতির জন্য সব সময় সিরাজুল আলম খান জীবন উৎসর্গ করেছেন।
কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস সিরাজুল আলম খানকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। তৎকালীন সময়ে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে? ভাসানী বলেছিলেন, আসসালামুয়ালাইকুম। আর সিরাজুল আলম খান বলেছিলেন, ছাত্র-যুবদের একত্র করে দেশ স্বাধীন করা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস লেখা হলে সিরাজুল আলম খানকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আপাতদৃষ্টিতে যা দেখা যায়, তা গ্রহণ না করে আরও গভীরে যাওয়া, প্রশ্ন করা এবং প্রশ্ন তোলা- ওগুলো আমি সিরাজুল আলম খানের কাছে শিখেছিলাম। স্বাধীনতা অর্জনে সিরাজুল আলম খানের অবদান যারা অস্বীকার করছেন, তারা বাংলাদেশকে অস্বীকার করছেন। তার অবদান ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমানে আমরা একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। যখন এদেশের নারীরা প্রতিদিন ধর্ষিত হচ্ছে। কত মানুষ যে গুম হয়েছে, এর কোনো হিসাব নেই। চিল যখন মুরগির বাচ্ছা ছোঁ মেরে নিয়ে যায়, মানুষকে সেভাবে গায়েব করা হচ্ছে। কই মানুষ তো এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে লড়াই করছে না। কিন্তু কেন? আমাদের সঙ্গে আমেরিকান ও ইউরোপিয়ানদের পার্থক্য কোথায়? ওরা পারে, আমরা পারছি না কেন? আমাদের যত বড় অর্জনের ইতিহাস আছে, তাদের কি সে ইতিহাস আছে? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, একটা সিন্দাবাদের ভূত আমাদের মাথার ওপরে চেপে বসে আছে। তাকে সরাতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।
ব্যারিস্টার ফারাহ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, আবদুল মালেক রতন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সাবেক সংসদ সদস্য হুমায়ুন কবির হিরু, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান প্রমুখ।