মানব জীবনের অন্যতম মৌলিক উপাদান জৈবিক চাহিদা। পাগল, অপ্রকৃতস্থ, অন্ধ, কানা, লুলা সবারই জৈবিক চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদা পূরণের মাধ্যমে মানুষ দুটি কাজ করে। প্রথমত, নারী-পুরুষ দৈহিক ও মানসিক পরিতৃপ্তি লাভ করে। দ্বিতীয়ত, সন্তান জš§ দান করে তারা। তাই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সবারই স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। এতে লাভবান হবে ব্যক্তি ও তার বন্ধু-বান্ধব। বলা যায়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রজনন স্বাস্থ্য। তাই এ বিষয়ে জ্ঞানের অভাব থাকলে জীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
মেয়েদের ঋতুস্রাব ও ছেলেদের বীর্যপাত হলে প্রজনন অঙ্গ
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
যৌন উত্তেজক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে
উপযুক্ত বয়সে ছেলেমেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থাসহ গর্ভধারণ করা উচিত। ২০ বছরের আগে গর্ভধারণ করা যাবে না
নিরাপদ মাতৃত্ব বজায় রাখতে হবে
অসাবধানতাবসত প্রজনন অঙ্গের মধ্যে অথবা প্রজনন অঙ্গ কোনো কিছুর মধ্যে ঢুকানো যাবে না
বয়ঃসন্ধি একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে একটি শিশুর শরীর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হয় ও প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। এ সময় দেহ বিভিন্ন ধরনের হরমোন উৎপাদন শুরু করে। ফলে মস্তিষ্ক, অস্থি, পেশি, ত্বক, স্তন ও জনন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর বৃদ্ধি শুরু হয়। বয়ঃসন্ধিকালের মধ্যভাগে এই বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং বয়ঃসন্ধিকাল শেষ হওয়ার মাধ্যমে এ বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানুষের ১০ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত সময়টাকে বলে বয়ঃসন্ধিকাল। এ সময় শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের ফলে কিশোর-কিশোরীরা নতুন জগতে প্রবেশ করে। তাদের চিন্তা-চেতনায় দেখা দেয় ব্যাপক পরিবর্তন। শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক বিকাশ ও দায়িত্ববোধ যোগ হতে থাকে। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধি হলো একাধারে দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক অভিজ্ঞতা।
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীরা প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। তাই এ সময় থেকেই প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা প্রয়োজন। কিশোর-কিশোরীরা প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে পারলে সুষ্ঠুভাবে নিজেদের যতœ নিতে পারবে এবং এ শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সুস্থ-সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে।
প্রজনন স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা
নিরাপদ যৌন আচরণ সম্পর্কে জানা ও তা মেনে চলা
প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ, যৌন রোগ সম্পর্কে জানা ও প্রতিরোধ করা
প্রয়োজন অনুযায়ী প্রজনন
স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া
অল্প বয়সে বিয়ে থেকে বিরত থাকা ও অন্যদের নিরুৎসাহিত করা
নিরাপদ যৌন আচরণের জন্য করণীয়
কৌতূহল বশে রেখে
কিশোর-কিশোরীদের এ বয়সে যৌন আচরণের ক্ষেত্রে সংযত থাকা উচিত
যৌন চিন্তা যেন মনে কম আসে সে জন্য পড়াশোনা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চাসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা প্রয়োজন
অশ্লীল বইপত্র, ভিডিও বা সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকা উচিত। এতে যৌনতার বিষয়ে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠে
যৌন নির্যাতনের শিকার হলে অবশ্যই দ্রুত মা-বাবা বা বিশ্বস্ত কোনো মানুষকে বিষয়টি জানাতে হবে
কোনো কারণে যদি কিশোর বয়সে বিয়ে হয়েই যায়, তবে অবশ্যই পরিবার পরিকল্পনা কর্মীর পরামর্শমতো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। (চলবে)