নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো উৎসাহিত করতে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার। চলতি জানুয়ারি থেকে এ প্রণোদনার হার দুই থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ খবর সব শাখায় পৌঁছে দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রক্রিয়া জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) নতুন কমিটির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ পরামর্শ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো থেকে ব্যাংকগুলোকে ভিন্ন রেটে (হারে) রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে হয়। ব্যাংকভেদে ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে ব্যাংকগুলো। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংক। ডলারের দাম বাড়লে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এ সমস্যা সমাধানে গৃহীত রেমিট্যান্স সংগ্রহে টাকার হার নির্দিষ্ট করার সুপারিশ করা হয় এবিবি’র পক্ষ থেকে। উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এবিবি ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) বসে একটি সমোঝোতা করা উচিত। সবার পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পাশে থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বৈধ উপায়ে দেশে পাঠানো উৎসাহিত করতে বিদ্যমান দুই শতাংশ প্রণোদনা আরও বাড়িয়ে দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ করেছে সরকার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সের বিপরীতে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা
করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি।
এছাড়া ইডিএফ ফান্ড থেকে ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ) থেকে ঋণ নেয়ার সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। এ ফান্ড থেকে ২০২১ সালের ৩১ জুন পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে।
এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে ইডিএফ ফান্ডের আকার ও সুদহারে পরিবর্তন এনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৭ এপ্রিল প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, ইডিএফের আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়। পাশাপাশি কমানো হয়েছে সুদের হার। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ইডিএফের ঋণের বিপরীতে লাইবর +১ শতাংশ সুদ রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ব্যাংকের এডি শাখাগুলো গ্রাহক পর্যায় থেকে দুই শতাংশ মুনাফা করতে পারবে।