Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 12:20 am

প্রণোদনায়ও বাজারে বিপরীতমুখী অবস্থা

পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীল অবস্থানে নেই। অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। এটি পুঁজিবাজারের অনেক ক্ষতি করবে। সরকার কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্যোগ নিয়েছে। এখন যদি কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী এসে দেখে ১০ বছর পর দেশের পুঁজিবাজারে এ রকম অবস্থা, তাহলে কী দেখে তারা আসবে? কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তো দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা দেখে আসবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র বিজনেস এডিটর কাজী আজিজুল ইসলাম এবং এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম।
কাজী আজিজুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীল অবস্থানে নেই। বাজার এক দিন বাড়লে দুই দিন কমে, আবার মাঝে মাঝে বাজার অস্বাভাবিক বাড়লে পরের দিন সেভাবে কমে। ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর অর্থাৎ ৯ বছর ধরে প্রতিনিয়ত অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলভাবে চলছে পুঁজিবাজার। বাজারের এ রকম অবস্থা বিশ্বের আর কোনো পুঁজিবাজারে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আবার প্রতিবছরই বাজেটে প্রত্যাশা থাকে পুঁজিবাজারে কী প্রণোদনা থাকবে। প্রণোদনা থাকলে বাজার আরও স্থিতিশীল অবস্থানে চলে আসবে। আসলে এটি অস্বাভাবিক প্রত্যাশা বলে মনে করি, কারণ এবার বাজেটে তাই হয়েছে। অর্থাৎ এবার বাজেটে পুঁজিবাজারে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাজার ভালো না হয়ে তার বিপরীতমুখী অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য নির্দেশনা বা উপদেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশনা বা উপদেশ বাস্তবায়ন করা কার দায়িত্ব নিশ্চয় অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে সেভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলে মনে করি। যদি এসব প্রতিষ্ঠান নিষ্ক্রিয় থাকে, সেক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো দুর্বল করে দিচ্ছে। এটি পুঁজিবাজারকে অনেক ক্ষতি করছে। আবার সরকার কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্যোগ নিয়েছে। এখন কথা হচ্ছে যদি কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী এসে দেখে ১০ বছর পর দেশের পুঁজিবাজারে এ রকম অবস্থা, তাহলে কী দেখে তারা আসবে। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তো দেশের পুঁজিবাজার দেখে আসবে।
শফিকুল আলম বলেন, বাজারের এ অবস্থার জন্য মূল সমস্যা হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট। এ আস্থার সংকট উত্তরণের জন্য বাজারসংশ্লিষ্টদের আরও গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। আবার অনেকে মনে করেছিল চলতি বাজেটে বাজারসংক্রান্ত কিছু প্রণোদনা থাকলে বাজার ভালো হবে, কিন্তু সেটি দেখা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, বাজারে যখন কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়, তখন ব্যক্তিবিশেষ সমাধা করা হয়, অর্থাৎ এখানে দেখা যায় কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তি সমস্যা হলে তাকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে, কিন্তু বাজার ভালো করার ক্ষেত্রে সমন্বিত যে উদ্যোগ, সেটি দেখা যায় না। বাজার উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি যদি পরিকল্পনা করি, অর্থাৎ এ বাজার হবে দেশের ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের অর্থের জোগানের প্রধান উৎস। কিন্তু সে রকম কিছু দেখা যাচ্ছে না।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ