প্রতারণার অভিযোগে আলেশা মার্ট গ্রাহকদের অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আলেশা হোল্ডিংস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স খাতের আলেশামার্ট। প্রতিষ্ঠানটি অনলাইন ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। গেটওয়েতে থাকা ৪২ কোটি টাকা গ্রাহকদের পরিশোধ করা হলেও এখনও প্রায় ২৫৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আলেশা মার্টের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও ঘেরাও কর্মসূচি করেন গ্রাহকরা।

গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টায় রাজধানীর গুলশান-২-এর ৯৫ নম্বর রোডে আলেশা মার্ট কার্যালয়ের সামনে এ অবস্থান ও ঘেরাও কর্মসূচি করেন গ্রাহকরা।

কয়েকজন গ্রাহক জানান, ২০২১ সালের মে-জুনে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করে আলেশামার্ট, যেখানে তারা বাইকের ওপর ৩৫ শতাংশ ছাড় দিয়ে ৪৫ দিনের মধ্যে বাইক প্রদান করবে, এমন প্রতিশ্রুতি দেয়। ওই ক্যাম্পেইনে আমাদের জানামতে, এক মাসের মধ্যে ৪৬ হাজার বাইকের অর্ডার পড়ে। এরপর আগস্টে ব্যাংক ডিপোজিট নামে বাইকের ওপর ৩৩ শতাংশ ছাড়ের আরেকটি ক্যাম্পেইন চালু করে।

২টা ক্যাম্পেইন মিলে সাত হাজার গ্রাহক প্রায় ৩০০ কোটি টাকার অর্ডার করলে পরবর্তী সময় পণ্য কিংবা অর্থ ফেরত কোনোটাই না দিয়ে গ্রাহকদের হাতে বিভিন্ন তারিখের চেক ধরিয়ে দেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী অপর্যাপ্ত টাকা থাকায় চেকগুলো ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়। পরবর্তী সময় আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার ফেসবুক লাইভে জানান, তারা নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী টাকা দিতে পারবেন না। তিনি ডিসেম্বর পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেন এবং ২০২২ সালের ১ জানুয়ারিতে ক্রমান্বয়ে টাকা দেয়া শুরু করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবারও ব্যর্থ হন এবং বিভিন্ন সময় ফেসবুক লাইভে এসে নানা রকম আশ্বাস দিতে থাকেন।

গ্রাকরা আরও জানান, নানারকম মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও গ্রাহকদের মূল টাকা ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো সুরাহা হয়নি।

উল্লেখ্য, ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে গেটওয়েতে থাকা ৪২ কোটি টাকা গ্রাহকদের পরিশোধ করা হলেও বাকি ২৫৮ কোটি টাকার চেকের মেয়াদ অধিকাংশের শেষ। অনেকের চেকের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াই আলেশামার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে তাদের নামে কয়েক হাজার চেক ডিসওয়ার প্রতারণার মামলা হয়েছে। কয়েকশ’ মামলায় তাদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

গ্রাহকরা আরও জানান, কয়েক হাজার মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও মঞ্জুর আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী কোনো এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যাচ্ছেন।

গ্রাহকরা জানান, অনতিবিলম্বে আমরা আমাদের মূল টাকা ফেরত চাই। ১৯ মাস সময় দেয়ার পরেও যেহেতু মঞ্জুর আলম শিকদার আমাদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, সেক্ষেত্রে তাকে ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর নামে যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, সেটা কার্যকর করে তাদের গ্রেপ্তার করা হোক। একটি করে মঞ্জুর আলমের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে সরকারকে দেনা পরিশোধ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০