মুকছেদ মিয়া, শ্যামপুরের গোলাপচাষি
শেয়ার বিজ: বাগানের অবস্থা কেমন?
মুকছেদ মিয়া: এখন তো শুষ্ক মৌসুম। অফসিজন চলছে। মজার ব্যাপার হলো যে সময় আমাদের গোলাপের ফলন কম, সে সময়ে বাজারে চাহিদাও তুলনামূলক কম থাকে।
শেয়ার বিজ: গোলাপ চাষের আগে এখানে কি চাষ হতো?
মুকছেদ মিয়া: তখন এখানে সবজি চাষ হতো। অনেক সবজি চাষি ছিল তখন।
শেয়ার বিজ: সবজি ছেড়ে হঠাৎ গোলাপ চাষে আগ্রহী হলেন কেন?
মুকছেদ মিয়া: সবজি চাষে তো অনেক সমস্যা। বৃষ্টিতে পানি জমে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিন সবজি উঠানো যায় না। এছাড়া বাজারদর ঠিক থাকে না। সবজি চাষে অনেক ঝামেলা।
শেয়ার বিজ: গোলাপ চাষের সুবিধা কী?
মুকছেদ মিয়া: গোলাপের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো প্রতিদিনই কিছু না কিছু আয় হয়। কারণ বাগান থেকে প্রায়দিনই ফুল তোলা যায়। প্রতি বছর গাছ লাগাতে হয় না। একবার গাছ রোপণ করলে ১৫ থেকে ২০ বছর টিকে থাকে। আমাদের গ্রামে ২৫ বছর বয়সী বাগানও আছে।
শেয়ার বিজ: গোলাপ চাষে অসুবিধা কী?
মুকছেদ মিয়া: অসুবিধা তেমন কিছু নেই। তবে গোলাপ চাষ নিয়ে কোনো গবেষণা হয় না। নতুন জাত বা কীভাবে ফুলের ফলন ভালো হবেÑএমন কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেই দেশে।
শেয়ার বিজ: এখানে কোন কোন জাতের গোলাপ চাষ হয়?
মুকছেদ মিয়া: আমাদের এখানে বেশ কয়েক জাতের গোলাপ চাষ হয়ে থাকে। সাদা গোলাপ মূলত দেখতে সাদা ও একটু ব্যতিক্রমী। মিরিন্ডার মূলত ফলন বেশি হয়। আমরা এটাই বেশি চাষ করে থাকি। এছাড়া লিংকন, লালবাহাদুর, গোলাপ বাহাদুর প্রভৃতির চাষ হয়ে থাকে।
শেয়ার বিজ: খরচ কেমন?
মুকছেদ মিয়া: খরচ তেমন বেশি নয়Ñযদি নিজে কাজ করা যায়। অনেক চাষি আছেন, যারা সব কাজই লোকের মাধ্যমে করান। যেমন ফুল তোলা থেকে গাছ ছাঁটাই, জমিতে নালা তৈরি করা প্রভৃতি। এছাড়া সার সেচের খরচ তো আছেই। আমার এক বিঘা জমিতে বছরে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়।
শেয়ার বিজ: গোলাপ চাষে আয় কেমন?
মুকছেদ মিয়া: ৬০ শতাংশের একটি জমিতে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করা যায়। তবে যারা বিষয়টি বোঝেন না কিংবা নিজে কাজ করতে পারেন না, তাদের এত লাভ হয় না।
শেয়ার বিজ: ফুল চাষের সম্ভাবনা কেমন?
মুকছেদ মিয়া: ফুল চাষে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার যদি আমাদের কিছু সুবিধা দিত, তাহলে গোলাপের পাশাপাশি অন্য দেশি ও বিদেশি ফুলও চাষ করা যেত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করা যেত।