প্রতিমাসে কমিউনিটি সেন্টারের লোকসান শতকোটি টাকা: বিসিসিএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: লকডাউনে বন্ধ থাকা চার হাজার কমিউনিটি সেন্টারে প্রতিমাসে লোকসান হচ্ছে শতকোটি টাকা। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন খালি রেখে সেন্টারগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টার কনভেনশন হল ও ক্যাটারিং অ্যাসোসিয়েশন (বিসিসিএ)। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি আলহাজ শাহ জাকির হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় চার হাজার প্রতিষ্ঠানের লোকসান হচ্ছে প্রতিমাসে প্রায় শতকোটি টাকা। এর সঙ্গে ডেকোরেটরের ক্ষতির পরিমাণ আরও ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা। কমিউনিটি সেন্টার, ডেকোরেটর, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ অন্য খাতের আয়হীন প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের পরিবারে নেমে এসেছে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। অনেকের খাবার কেনার মতো টাকাও নেই। সব মিলিয়ে এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২০ লাখের মতো মানুষ জড়িত রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় জীবিকার অনিশ্চয়তায় আছে তারা। তাদের মধ্যে যারা ফটোগ্রাফি, সাজসজ্জা, লজিস্টিক সেবা, ফুল সরবরাহ এবং বোর্ড মিস্ত্রি, ডেকোরেশন ও ক্লিনিং কাজসহ বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারা সবাই এখন বেকার হয়ে পড়েছেন। মহাবিপাকে পড়েছেন কমিউনিটি সেন্টার ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে গেছে তাদের আয়-রোজগার। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। বছরজুড়ে বুকিং দেয়া সব ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই ক্ষতির বোঝা সামলে ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোটা প্রায় অসম্ভব ও চ্যালেঞ্জিং।’

জাকির হোসেন বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকা শহরের প্রতিটি এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে কমিউনিটি সেন্টার। এসব কমিউনিটি সেন্টারে পানচিনি, বাগদান, গায়েহলুদ, বিয়ে, বিবাহোত্তর সংবর্ধনা, জন্মদিনসহ নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে অন্দরসজ্জাসহ অনেক কাজ কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ বা তাদের মনোনীত লোক করে থাকে। রাজধানীতে সরকারি-বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টার ও কনভেনশন সেন্টারের সংখ্যা ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০০। সারা দেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় চার হাজার। গড়ে ৫০ জন করে স্থায়ী কর্মচারী ধরলে দেশে প্রায় দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে।’

কমিউনিটি সেন্টার খোলার দাবি জানিয়ে জাকির হোসেন বলেন, ‘কমিউনিটি সেন্টারগুলো বন্ধ থাকার পরও ঘরভাড়া, ইনকাম ট্যাক্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, ভ্যাট, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল, ওয়াসা বিল, গ্যাস বিল প্রভৃতি পরিশোধ করতে হচ্ছে। একেকটি কমিউনিটি সেন্টার কমপক্ষে পাঁচ থেকে ৩০ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে স্থাপিত, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১০০ বা ২০০ লোকের অনুষ্ঠান করা মোটেই অসম্ভব নয়। একটি হোটেলে এক থেকে দুই হাজার বর্গফুট জায়গার মধ্যে যেখানে ১০০ থেকে ২০০ লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, সেখানে একটি কমিউনিটি সেন্টারের বিশাল ও সুপরিসর জায়গায় সমানসংখ্যক লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করা আরও সহজ ও স্বাস্থ্যসম্মত। তাই মানবিক কারণে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠান করার সুযোগ দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০