নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্য প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হলে উৎসে কর কমানো অত্যাবশ্যক। রফতানি খাতগুলো যেহেতু লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি তাই সার্বিক বিবেচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনা অথবা কর রেয়াতের মাধ্যমে সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটির সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ইউরোপের বাজারসহ অন্য দেশের ক্রেতারাও পণ্যের মূল্য ক্রমাগতভাবে হ্রাস করছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান বেড়েছে সাত দশমিক ৮৪ শতাংশ। পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি ও শ্রমিকদের গত পাঁচ বছরে দুই দফায় ২১৯ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। ফলে পোশাকশিল্প নিদারুণ চাপের মধ্যে রয়েছে এবং অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে অস্তিত্ব ও সক্ষমতা টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের শর্তানুযায়ী এ শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রেমিডেশন ও রেট্রোফিটিং কাজে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে।
ভ্যাট আইনের প্রয়োগের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়ে থাকে মন্তব্য করে শফিউল বলেন, আমরা আইন প্রয়োগের বিরুদ্ধে নই, তবে হয়রানির শিকার হতে চাই না। সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাট আইনের প্রয়োগের নামে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়ে থাকে। রাজস্ব আদায় করতে হবে আইনসম্মতভাবে, এক্ষেত্রে আইনের অপপ্রয়োগ যেন না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল রেখে গঠিত ওয়ার্কিং কমিটি প্রতি মাসে কেস টু কেস ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করবে। ফলে সরকার যেমন রাজস্ব পাবে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করবেন।
মহিউদ্দিন বলেন, সবুজ কারখানার ক্ষেত্রে আয়করের হার ১৪ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১০ শতাংশ এবং অন্যদের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ১২ শতাংশ নির্ধারণ করার জন্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত খাদ্যসহ সব রফতানি খাতের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫০ শতাংশ করার জন্য আমরা প্রস্তাব করেছিলাম। তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত খাদ্যসহ সব রফতানি খাতের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ০.৫০ শতাংশ নির্ধারণের জন্য আবারও অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি ক্ষুদ্র কারখানা মালিকদের সুবিধার্থে বলেন, রেয়াতি সুবিধা না থাকায় ক্ষুদ্র কারখানা মালিক, শ্রমিক ও গরিব ভোক্তাদের কথা বিবেচনা করে স্থায়ীভাবে তৈরিকৃত প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও প্লাস্টিকের পাদুকা এবং হাতে তৈরি পাউরুটি ও বিস্কুটের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তার করছি। ভ্যাট আইন ২০১২ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেহেতু দুই বছর সময় সামনে থাকছে, সেহেতু এ আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাধীন সংস্থা কর্তৃক ‘ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট’ (প্রভাব পর্যালোচনা) মাধ্যমে সংশোধন করে তা বাস্তবায়ন করা হোক।