সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী

প্রতিযোগিতা যেন প্রতিহিংসা না নয়

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সবসময় ইতিবাচক ধারণার চর্চা করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার জন্য এমন কিছু করা যাবে না, যা প্রতিহিংসাপরায়ণতার জন্ম দেয়। এসব বিষয় মানলে সাফল্য একদিন আসবেই।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভার্চুয়াল চতুর্থ সমাবর্তনে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সভাপতিত্ব করেন।

রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের উপদেশ দেব না। একজন মা হিসেবে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই। জীবন থেকে, আশপাশের পরিবেশ থেকে, কাছের মানুষ থেকে সবসময় শিখতে হবে। এ শিক্ষা কখনও আনন্দের, কখনও দুঃখের হবে, কখনও কখনও কষ্টের আবার কখনও অস্বস্তির হবে। কখনও বা কখনও পরিশ্রমের হবে। আমার অনুরোধ, পরিস্থিতি যাই হোক, কী শিখলেন সেটুকু অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন। সেটুকু গ্রহণ করার চেষ্টা করবেন। প্রয়োজনমতো তা জীবনে প্রয়োগ করবেন। জীবনের কোনো শিক্ষাই ফেলা যায় না, কোনো দিন না কোনো দিন কাজে লাগে।’

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার যেমন গুরুত্ব রয়েছে, তেমনি অভিজ্ঞতারও বিকল্প নেই। আমার এই জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি, অর্জনের পেছনে যারা স্নেহ-ভালোবাসা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের যেমন স্মরণ করি, ঠিক তেমনি আমারই অগ্রযাত্রা যারা বাধা বা থামিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাদেরও স্মরণ করি। যারা আমার অগ্রযাত্রার সামনে বাধার দেয়াল তৈরি করে পরাজিত করতে চেয়েছিলেন তাদের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। তাদের কারণে আমি শিখেছি, কীভাবে বাধার দেয়াল অতিক্রম করতে হয়। হোঁচট খেয়ে কী করে ওঠে দাঁড়াতে হয়।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘সবসময় ইতিবাচক ধারণাকে চর্চা করতে হবে। কতজন ভালো আছেন সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে আপনি কতজনকে ভালো রাখতে পেরেছেন সেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। হতাশা, নিরাশা, হিংসা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে। প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার জন্য এমন কিছু করা যাবে না, যা আপনাকে প্রতিহিংসাপরায়ণ করে তোলে। এসব বিষয় মানলে সাফল্য একদিন আসবেই।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীরা আমাদের ভবিষ্যতের কাণ্ডারি। তবে প্রত্যেক গ্র্যাজুয়েটকে মনে রাখতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ হলেও জীবনের পাঠশালা তোমাদের প্রতিনিয়ত শেখাবে। তোমাদের নতুন নতুন চিন্তাধারাই সমাজ এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান। সমাবর্তনে মোট ১ হাজার ৪৬৪ জনকে ডিগ্রি দেয়া হয়। এর মধ্যে ৬ জনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল এবং ১৩ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল দেয়া হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০