প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গু আরও ভয়ংকর হবে

জাকিয়া আহমেদ: চলতি মাসের প্রথম দিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে রোগী ভর্তির সংখ্যা ৪০০ ছাড়ায়; একদিনে ৪০০ ছাড়ানোর ঘটনা এ দিনেই প্রথম ছিল। একই মাসের শেষ সপ্তাহে এসে একদিনে রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। দেশের ৬৪টি জেলাতেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এবার, গত বছরের চেয়ে প্রায় মাস খানেক আগেই প্রাণঘাতী এই রোগের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর মতো বাহক নির্ভর রোগ বেশি ছড়াচ্ছে, যাতে প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। এ রোগ যাতে আশঙ্কজনকভাবে বৃদ্ধি পেতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশের জেলা এর সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পারিবারের প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক সচেতনতা সৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন।

দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক পর্যায়ে মধ্য জুলাইতে সেটা তীব্রতায় রূপ নেয়। প্রায় ২০ দিনের মাথায় শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন গত ৫ আগস্ট। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। সেখানে রয়েছেন একজন স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও। এরপরও স্বাস্থ্য বিভাগে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যারা প্রধান ভূমিকা পালন করেন, সেই সিটি করপোরেশনেও কার্যকর অর্থে কেউ নেই। এ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগেই শঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, এবারে ডেঙ্গু বাড়বে এবং দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। যদিও স্বাস্থ্য সচিব গত ১১ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। সেদিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ডেঙ্গুর বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। ঢাকার বেশির ভাগ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা ডেডিকেটেড কর্নার করা হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের জনবলকে ডেঙ্গু বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় আছে।

এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মশক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের উদ্দেশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদারকি টিম প্রতিটি অঞ্চলে পরিচালিত কার্যক্রম সঠিকভাবে তদারকি করছে। শিক্ষার্থীসহ অন্য নাগরিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে।’ মিরপুর, সেকশন-৬ এর অন্তর্গত বি-ব্লক এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলমান ডিএনসিসির সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করার সময় তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমাদের কর্মীরা বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করে এবং ওষুধ ছেটান। কিন্তু বাসাবাড়ির ভেতরে আমাদের কর্মীদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই নিজেদের বাসাবাড়ি নিজেদেরই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহƒত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’ সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই একযোগে জনসচেতনতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীরাও ডিএনসিসির এই সপ্তাহব্যাপী জনসচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। উল্লেখ্য, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে একযোগে ডিএনসিসির সব ওয়ার্ডে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি শুরু করেছে ডিএনসিসি। এই বিশেষ কর্মসূচি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করা হবে।এ কার্যক্রম একযোগে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে পরিচালনা করা হচ্ছে। বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রমে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ডিএনসিসি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর ঠিকানা সংগ্রহ করে এসব ঠিকানার চারপাশে ফগিং এবং লার্ভিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া বছরব্যাপী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ডেঙ্গু রোগীর ঠিকানায় সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা টেলিফোনে সরাসরি যোগাযোগ করে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান এবং কীটনাশক প্রয়োগ প্রদান নিশ্চিত করছে। কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি বছরব্যাপী এডিস মশার নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কিত বার্তা-সংবলিত লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ, মাইকিং, র‌্যালি এবং অ্যাডভোকেসি সভার আয়োজন করা হয়েছে। সপ্তাহব্যাপী পরিচালিত বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচিতে প্রতিটি ওয়ার্ডকে বিভিন্ন সাব-ব্লকে ভাগ করে প্রতিটি ব্লকের সব বাড়ি পরিদর্শনের মাধ্যমে এডিস মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ এবং ধ্বংস করা হচ্ছে।

মাঠপর্যায়ে পরিচালিত সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য একটি করে কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিশেষ মশক নিধন কার্যক্রম তদারকির জন্য গঠিত কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিমগুলোর প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু বর্ষা মৌসুমের হলেও এখন এটা সারা বছরের। যদি এখনই ডেঙ্গুর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না গ্রহণ করে তাহলে এবারও তাই হবার আশঙ্কাই বেশি। সেইসঙ্গে এখন গত কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। এসব কিছু আমলে নিতে হবে এক্ষুণি।

সেপ্টেম্বরে খুব দ্রুতই এ সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিদিনকার ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেল, গত ১ সেপ্টেম্বর ভর্তি রোগী ছিল ৪৭৮ জন; মৃত্যু তিনজনের। সেদিন মোট রোগী ছিল ১৩ হাজার ৩১৯ জন আর মৃত্যু ছিল ৮৬ জনের। ঠিক তিনদিন পর ৪ সেপ্টেম্বরে রোগী সংখ্যা এক হাজার বেড়ে মোট রোগী ১৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ৭ সেপ্টেম্বর রোগী ছাড়িয়ে যায় ১৫ হাজার। ৯ সেপ্টেম্বরে রোগী হয় ১৬ হাজারের বেশি। ১০ সেপ্টেম্বরে মৃত্যু ১০০ ছাড়িয়ে যায়; মোট মৃত্যু হয় ১০২ জনের। ১১ সেপ্টেম্বরে রোগী সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ১৩ সেপ্টেম্বর রোগী ১৮ হাজার ছাড়ায়। ১৫ সেপ্টেম্বরে ছাড়িয়ে যায় ১৯ হাজার। ১৭ সেপ্টেম্বরে রোগী ছাড়ায় ২০ হাজার, একদিনের ব্যবধানে ১৮ সেপ্টেম্বরে রোগী ছাড়িয়ে যায় ২১ হাজার, ২০ সেপ্টেম্বরে রোগী হয় ২২ হাজারের বেশি। আর ২১ সেপ্টেম্বরে মোট রোগী সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩ হাজার ১০৮ জন আর মোট মৃত্যু দাঁড়ায় ১২৫ জনে। চলতি বছরে মোট রোগী সংখ্যায় নারী রোগীর হার ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ আর পুরুষ রোগীর হার ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে মৃত্যুতে নারী রোগীর হার বেশি; ৫৪ শতাংশ দশমিক ৪ শতাংশ আর পুরুষ মৃত্যুর হার ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরো বছরের তথ্যে দেখা যায়, বছরের শুরুতে অর্থ্যাৎ জানুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় এক হাজার ৫৫ জন; মৃত্যু হয় ১৪ জনের, ফেব্রুয়ারিতে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন; মৃত্যু হয় তিনজনের, মার্চে রোগী ছিল ৩১১ জন; মৃত্যু পাঁচজনের, এপ্রিলে আক্রান্ত ৫০৪ জন; মৃত্যু দুজনের, মে মাসে আক্রান্ত ৬৪৪ জন; মৃত্যু ১২ জনের, জুনে আক্রান্ত ৭৯৮ জন; মৃত্যু আটজনের। বছরের মাঝামাঝিতে জুলাই মাস থেকে রোগী বাড়তে থাকে; ছাড়িয়ে যায় দুই হাজারের ঘর। এ মাসে হাসপাতলে ভর্তি হওয়া সংখ্যা দুই হাজার ৬৬৯ জন; মৃত্যু হয় ১২ জন, আগস্টে কয়েক গুণ বেড়ে রোগী হয় ছয় হাজার ৫২১ জন; মৃত্যু ২৭ জন। আর চলতি মাসে এখন পর্যন্ত (২১ সেপ্টেম্বর) রোগী সংখ্যা ১০ হাজার ২৬৭ জন আর মৃত্যু ৪২ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ হিসাব কেবল অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী। তালিকার বাইরের হাসপাতাল, ক্লিনিক, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার ও ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ খেয়ে রোগীর হিসাব এর বাইরে। এই রোগীদের তথ্য পাওয়া গেলে মোট রোগী ও মোট মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মন্তব্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। দেশে মোট রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী এবং মৃত্যু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি)। মোট রোগীর মধ্যে পাঁচ হাজার ৭০৫ জন আর মোট মৃত্যুর ৭২ জনই ডিএসসিসির। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।

এই বিভাগের মোট রোগী পাঁচ হাজার ৪৩২ জন। তবে দেশের সিটি করপোরেশন এলাকার চাইতে সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকায় এবারে রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আগেই বলেছেন, ডেঙ্গু এখন আর শহুরে রোগী নয়। এটা ছড়িয়েছে পুরো দেশে। আর এটা এখন আর বর্ষা মৌসুমের নয়, বরং পুরো বছরের। তবে বর্ষায় বৃষ্টি হয় বলে তখন ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে বেশি। যে কোনো জমা পানিতে এডিস ডিম পাড়ে এবং এর প্রজনন বৃদ্ধি হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কেবল ঢাকা নয়, এখন দেশজুড়ে এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ রোগী সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি হচ্ছে, হবে। মশা মারার কার্যক্রম নেই, চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ নেই-দিকনির্দেশনা নেই, হাসপাতালগুলোর পরিচালক নেই। হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসকরা বদলি, নানা ধরনের আতঙ্ক। রোগী বাড়ছে লাফিয়ে, রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে-সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য বিভাগ-সবকিছু মিলিয়ে ভীষণ চিন্তার বিষয় হয়ে গেল, বলেন তিনি। অধ্যাপক বেনজির আহমেদ বলেন, মশা মারার সঙ্গে সঙ্গে যদি এখনই সব ধরনের ‘অ্যাকশন’ স্বাস্থ্য এবং সিটি করপোরেশন না গ্রহণ করে তাহলে রোগী বাড়বে, সমানুপাতিকহারে বাড়বে মৃত্যু।

দেশে প্রথম ২০০০ সালে ডেঙ্গু সরকারের নজরে আসে। এরপর থেকে প্রতিবছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকলে ২০২০ সাল ছিল ব্যতিক্রম। সে বছরে করোনা মহামারি দেখা দেয়। রোগতত্ত্ববিদরা সে সময় বলেছিলেন, একইসঙ্গে দুটো ভাইরাসের আক্রমণ হয় না। তবে করোনার আতঙ্ক কাটতে ফের ডেঙ্গু চোখ রাঙানো শুরু করে। ডেঙ্গু কতটা ভয়ানক হতে পারে, তা ২০২৩ সালেই দেখেছে বাংলাদেশ। গোটা বছরে ৩ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়, তার আগে ২২ বছর মিলিয়েও এত রোগী পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর সংখ্যাটিও ছিল উদ্বেগজনক। যেখানে ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ৮৪৯ জনের, সেখানে শুধু ২০২৩ সালেই সংখ্যাটি হয়ে যায় দ্বিগুণ। ২০২৩ সালে কেবল সরকারি হিসাবেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। শতাংশের হিসেবে আক্রান্তদের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫৩ জন মারা যায়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রতি বছরে ডেঙ্গুতে ১০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। ২০২৩ সালে পুরো বিশ্বে মৃত্যু হয় ৫ হাজার ৫০০ জনের বেশি, যার মধ্যে এক হাজার ৭০৫ জনই বাংলাদেশের। চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
প্রতিবেশ ও আত্মীয়সজনকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তাদের বাড়ি ঘর ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের জ্বর হলে দেরি না করে যতদ্রুত সম্ভব ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০