Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 9:36 pm

প্রতি বছরই ঘাটতি বাজেট হচ্ছে

এবার বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঘাটতি রয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির পাঁচ শতাংশ। প্রতি বছরেই ঘাটতি বাজেট হচ্ছে, আবার সংশোধনও হচ্ছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান আহমেদ আল কবীর এবং এনবিইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।
আহমেদ আল কবীর বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতা ছাড়া কিছু নয়। এর লক্ষ্য উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, গ্রোথের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, সামাজিক নিরাপত্তা শক্তিশালী করা এবং উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা।
তিনি আরও বলেন, মূসক থেকে এক লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা আয় হবে। এটি নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে অনেক প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিলেও তা সরকারের কোষাগারে জমা হচ্ছে না এবং ভ্যাট নেওয়ার পর একটি সিøপ দেওয়ার কথা সেটিও দেয় না। অথচ সাধারণ জনগণ ঠিকই ভ্যাট দিয়ে যাচ্ছে। আসলে এ খাতে দক্ষতা তেমন বাড়েনি। সরকারের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন হতে হবে। এখনও জিডিপির তুলনায় কর দেওয়ার হার যে কোনো উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে অনেক নিচে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার প্রয়োজন।
আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, এবার বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঘাটতি রয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির পাঁচ শতাংশ। আর এ ঘাটতি বাজেট নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরেই ঘাটতি বাজেট হচ্ছে, আবার সংশোধনও হচ্ছে এবং কমবেশি অর্জনও হয়েছে।
এ ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা, বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে এটি পূরণ করা হবে। তবে এ ঘাটতি কোনো ঘাটতি নয়, যদি উন্নয়ন বন্ড চালু করা যায়। উন্নয়ন বন্ড বলতে, যেখানে নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকবে এবং সুদের হার ১২-১৩ শতাংশ হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদ অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ভাঙানো যাবে না। সেটি হতে পারে পাঁচ থেকে সাত বছরের বেশি হতে পারে। এখানে এফডিআর, সঞ্চায়পত্র ও উন্নয়ন বন্ডের মধ্যে পার্থক্য কী? এফডিআর হচ্ছে স্বল্প মেয়াদি আমানত। এটি যে কোনো সময় বা কোনো সমস্যায় ভেঙে ফেলা যায় এবং সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
তিনি আরও বলেন, সুদের হার কমিয়ে কী লাভ। ইতোমধ্যে
সরকার কয়েকবার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার চেষ্টা করেছে এবং তা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কয়জন কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ী লাভবান হয়েছেন। বেশি লাভবান হয়েছেন করপোরেট ব্যবসায়ীরা। সরকার আবারও সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার নির্দেশ দিয়েছে। তবে এটা সম্ভব হবে না। সুদের হার যত কমানো হবে ব্যবসায়ীরা তত লাভবান হবেন। কর আদায়ের ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে। ভ্যাটের ওপর দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন নির্ভর করে। কারণ এখন পর্যন্ত সরকারের কোষাগারে ২৫ শতাংশ কর জমা হয়েছে বলে মনে হয় না।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ