Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 3:06 pm

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপান

ধূমপানে বিষপান, এটি সবারই জানা। তবু বাড়ছে ধূমপানকারীর সংখ্যা। স্কুলপড়ুয়া শিশু থেকে শুরু করে বার্ধক্যে কাবু হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরাও এই ধূমপানে আসক্ত।

ধূমপানের কারণে নানা জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। যারা দীর্ঘদিন ধরে ধূমপানে আসক্ত, তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিনে দিনে হ্রাস পায়। ধূমপানের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয়ও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাতের ব্যথায় ভোগার প্রবণতাও দেখা দেয়। ধূমপানের সঙ্গে হƒদরোগের রয়েছে সরাসরি সংযোগ। ধূমপানের কারণেই বেড়ে যায় করোনারি হার্ট ডিজিজের আশঙ্কা। এই রোগে রক্ত জমাট বেধে ধমনীর দেয়ালে লেগে থাকে, যে কারণে ঘটতে পারে প্রাণঘাতী হার্ট অ্যাটাক। সিগারেটে নিকোটিন ছাড়াও থাকে বিষাক্ত আরও নানা ধরনের উপাদান। এর ফলে ফুসফুস তো বটেই শ্বাসনালি, খাদ্যনালি, প্যানক্রিয়াস, কিডনি, লিভার, মূত্রথলি এবং কোলনও ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে। নারীরা ধূমপান করলে আক্রান্ত হতে পারেন স্তন এবং গর্ভাশয়ের ক্যানসারে। ফুসফুস তো বটেই, ধূমপনের কারণে

ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো শ্বাসতন্ত্রই। দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, সর্দি-কাশির মতো রোগ।

জনসমাগমের স্থানে ধূমপান করলে রয়েছে শাস্তির বিধান। আইনানুযায়ী জনসমাগমের স্থানে ধূমপানকারীর শাস্তি অনধিক তিনশ টাকা অর্থদণ্ড এবং পুনরায় আইন অমান্যকারীর জন্য রয়েছে দ্বিগুণ অর্থদণ্ডের বিধান। কিন্তু আমাদের দেশে আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী পরোক্ষ ধূমপানের কারণে পৃথিবীতে বছরে ১২ লাখ মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তারা আরও জানান, তামাকের ধোঁয়ায় রয়েছে সাত হাজার রাসায়নিক পদার্থ, যার মধ্যে ৭০টি ক্যানসার সৃষ্টিকারী। ফুসফুস ক্যানসার, স্ট্রোক, হƒদরোগসহ উপরোক্ত ধূমপানের কারণে সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান।

ধূমপান প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। শিক্ষা ও সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় বন্ধসহ তা বিপণনে জড়িতদের নিরুৎসাহিত করতে হবে।

ধর্মীয় অনুশাসন মানার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সন্তানরা কোন কোন সঙ্গীর সঙ্গে মিশছে তা সতর্ক দৃষ্টিতে খেয়াল করতে হবে।

সাইদুর রহমান শাহিদ

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়