শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি বেড়েছে। ফলে আগের প্রান্তিকের মতোই এ প্রান্তিকেও দেশটির অর্থনীতির শক্তিশালী চাকা সচল থাকল। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স ডিপার্টমেন্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে তাদের দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পেয়ে তিন শতাংশে পৌঁছেছে। যেখানে আগের বছরের একই সময় ছিল দুই দশমিক ২৮ শতাংশ। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) প্রবৃদ্ধি ছিল তিন দশমিক এক শতাংশ। খবর বিবিসি।
সম্প্রতি টেক্সাস ও ফ্লোরিডাসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে হারিকেন ইর্মা ও হার্ভে আঘাত হানায় দেশটিতে ১৩১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে বেসরকারি খাতে ১২১ বিলিয়ন ডলার আর সরকারি খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। এরপর বিশ্লেষকরা ধারণা ছিল, তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। রয়টার্সের অর্থনীতিবিদদের ধারণা ছিল তৃতীয় প্রান্তিকে দুই দশমিক পাঁচ শতাংশের প্রবৃদ্ধি হবে।
কিন্তু পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী গতি অব্যাহত। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করহ্রাস নীতি বণিকশ্রেণিকে কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করেছে। আর হারিকেনের ফলে ভোক্তারা খরচ কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ট্রাম্প নতুন করনীতি প্রণয়ন করেন। তাতে ধনীদের জন্য আগের ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনে। আর আগস্টে মিশোরিতে এক সভায় ট্রাম্প ঘোষণা দেন প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশের ওপরে উন্নীত করার। যার ফল চলতি প্রান্তিকেই পেয়ে গেলেন ট্রাম্প।
ত্রৈমাসিক উপাত্ত প্রকাশ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্টের বাণিজ্যসচিব উইলবার রস বলেন, জিডিপি প্রতিবেদন উন্নতির প্রকৃতি লক্ষ করা গেছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি হারিকেন আঘাত হানার পর এটি একটি ‘উল্লেখযোগ্য’ অর্জন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইছেন প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশের ওপরে ধরে রাখতে। আর গত ছয় মাস থেকে তা অব্যাহত রয়েছে, যা ২০১৪ সালের পরবর্তী দীর্ঘ সময়ের। কর হ্রাস নীতি ও অন্যান্য শক্তিশালী নীতিই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলে তিনি মনে করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের ভোক্তা ব্যয় তিন দশমিক তিন শতাংশ থেকে তৃতীয় প্রান্তিকে কমে দুই দশমিক চার শতাংশে নেমে এসেছে। গৃহ নির্মাণ ব্যয়ও হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে রফতানি ও ব্যবসায় বিনিয়োগ বেড়েছে আগের প্রান্তিক থেকে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যানেথ রোগোফ বলেন, ওবামা প্রশাসন থেকে ট্রাম্প প্রশাসনে প্রবৃদ্ধি শ্রমবাজারের উন্নয়নকে প্রতিফলন করে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের কিছু পরিকল্পনা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। জব মার্কেট প্রসারিত হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো সূচকে রয়েছে।