প্রত্যাশার লাগাম টেনে ধরলেন মাশরাফি

 

ক্রীড়া প্রতিবেদক: যে কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটে যে কোনো কন্ডিশনেই প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারে বাংলাদেশ। আর সেটা যদি হয় ওয়ানডে ক্রিকেট, তাহলে তো কথাই নেই। গত দেড়-দুই বছর নিজেদের প্রিয় এ ফরম্যাটে দুর্দান্ত টাইগাররা। যার সবশেষটা দেখা গেছে শ্রীলঙ্কা সফরেও। যদিও আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে প্রত্যাশার লাগামটা টেনে ধরছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কেননা ভিন্ন কন্ডিশন, তার ওপর আবার প্রতিপক্ষ ভীষণ শক্তিশালী। ইতিহাসও পক্ষে নেই। তাই তো মর্যাদার এ আসরে নিজেদের  মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ওয়ানডে অধিনায়ক।

এগারো বছর পর আবারও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে আজ রাতে ঢাকা ছাড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সাসেক্সে দশ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প। সেখান থেকে ৭ মে দল যাবে আয়ারল্যান্ডে। খেলবে ত্রিদেশীয় সিরিজে। এরপর জুনের শুরুতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের সফর। তার আগে গতকাল মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে মিডিয়া সেন্টারে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে হাজির মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেখানে এ টুর্নামেন্টের প্রত্যাশা, সম্ভাবনা নিয়ে কথা বললেন তিনি। জোর দিলেন মানসিক প্রস্তুতিতেই বেশি। ‘আমার কাছে মনে হয়, যদি প্রতিপক্ষের দিকে তাকান, এটা এত সহজ হবে না। হয়তো আমরা ওই কন্ডিশনে ইংল্যান্ডকে দুইবার ও কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে একবার হারিয়েছি। যদিও ওইগুলো ইতিহাস। তারপরও আমার কাছে মনে হয় সম্ভব। সব কিছু নির্ভর করছে কীভাবে আমরা আমাদের মানসিকতাকে ঠিক রাখি। আমার কাছে মনে হয় না ২০-২৫ দিনের ক্যাম্পিংই সব কিছু হয়ে যাবে, যদি আমাদের মানসিক শক্তিটা ঠিক না রাখি।’

আয়ারল্যান্ড সিরিজের আগে দশ দিনের ক্যাম্পটাকে ধরা হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি হিসেবে। সেরা প্রস্তুতি নিতে চায় বাংলাদেশ, যা মযার্দার এ লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে কাজে দেবে মনে করছেন মাশরাফি। যদিও দুই দেশেই এখন দুই রকম আবহাওয়া। ‘ক্যাম্পটাকে আয়ারল্যান্ড ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। আয়ারল্যান্ডে একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলব আমরা। শুনেছি আয়ারল্যান্ডে এখনও শীতকাল। আর ইংল্যান্ডে মাত্র গ্রীষ্ম শুরু। আমার মনে হয় দুই রকম আবহাওয়ায় উইকেটও দুই রকম আচরণ করতে পারে। আমরা যে দশ থেকে ১২ দিন ক্যাম্প করবো, এটা আমাদের জন্য ভালো প্রস্তুতির মঞ্চ হতে পারে। সঙ্গে কয়েকটি অনুশীলন ম্যাচও খেলবো। আন্তর্জাতিক ম্যাচও রয়েছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে আমরা যদি ভালো প্রস্তুতি নিতে পারি, আমাদের আত্মবিশ্বাসটাকে ধরে রাখতে পারি, তাহলে আশা করি ভালো কিছু হবে।

এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সে স্মৃতি কিছুটা হলেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিচ্ছে টাইগারদের। তারপরও এবার লম্বা সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই শঙ্কার সঙ্গে রয়েছে ভয়ও। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে আয়ারল্যান্ড সফর যে ভয় কাটিয়ে দিতে পারে টাইগাররা। গতকাল এ নিয়ে মাশরাফি বললেন, ‘একটা ভয় থাকে, সফরের শেষের দিকে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাই। আগের ইতিহাস বলে, শেষের দিকে এমন হয়েছে, একটা সেশন খুব ভালো খেলে পরের সেশনটা খুব খারাপ হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে আমরা পুরো টুর্নামেন্ট ভালো খেলতে পেরেছিলাম। জয়ের ভেতরে ছিলাম, পয়েন্ট টেবিলে এমন একটা অবস্থায় ছিলাম যে কোয়ার্টারে ওঠার উত্তেজনা ছিল। ক্লান্তি তাই সেভাবে আসেনি। আমার মনে হয়, শুরুর জয়গুলো এ ক্লান্তির ব্যাপারটা দূর করতে পারে। এবার যেটা আয়ারল্যান্ডে করতে পারি। জয়ের ভেতরে থাকলে ভেতরের অনুভূতি খুব ভালো থাকে।’

আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ের সেরা আট দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত খেলেছে ৮ ম্যাচ। জয় মাত্র একটিতে। সেটিও ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০০৯ ও ২০১৩ সালের আসরে সুযোগই মেলেনি বাংলাদেশের। অধিনায়ক মাশরাফি ও সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছাড়া বর্তমান দলের কারোরই এ টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। যে কারণেই হয়তো প্রত্যাশার লাগামটা টেনে ধরলেন মাশরাফি। নিজেদের স্বাভাবিক খেলার সঙ্গে মানসিক শক্তিটা ধরে রেখেই মর্যাদার এ টুর্নামেন্টে এগোতে চান টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০