Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 6:21 pm

প্রথমবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে রক্তে সিসা ও ভারী ধাতু নির্ণয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুসূচকবিশিষ্ট গুচ্ছ জরিপ বা এমআইসিএসের (মিকস) সপ্তম রাউন্ডের কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত এ জরিপে মূলত শিশু ও নারীকেন্দ্রিক নানা সূচকের উপাত্ত অনুসন্ধান করা হয়। জরিপটিতে প্রথমবারের মতো যুক্ত করা হচ্ছে রক্তে সিসা ও ভারী ধাতুর মাত্রা নির্ণয়ের বিষয়টি।

গতকাল মিকস জরিপের সপ্তম ধাপের ২০২৪-২৫ সময়ের জরিপ কার্যক্রম উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এ সময় প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা এ কথা জানান। জরিপের কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের আবাসিক প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।

শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে পরিকল্পনা দরকার। সঠিক পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজন তথ্য। তথ্য দিয়েই সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়। বিবিএসের অর্জন গর্ব করার মতো। তাদের উদ্যোগের সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকার আছে। সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আগামীতে নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নেয়া হবে, পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা নেয়া হবে। এসব পরিকল্পনা নিতে পরিসংখ্যান কাজে লাগানো হবে।

শিশু ও নারীদের অধিকার সুরক্ষায় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য ইউনিসেফ মিকস জরিপের সূচনা করে নব্বই দশকে। বাংলাদেশে এই জরিপ পরিচালনায় একসঙ্গে কাজ করে ইউনিসেফ ও বিবিএস। তিন দশকে কয়েক ধাপ জরিপ হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৬৪ হাজার পরিবারের নারী ও শিশুদের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়। কারণ এটি এক ধরনের পারিবারিক জরিপ। শিশু ও নারী-সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের বাস্তব পরিস্থিতির ধারণা পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে নারী ও শিশুদের জন্য উপযোগী নীতিমালা তৈরি, পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়তা করে।

এই জরিপের অধীন এবার প্রথম যুক্ত করা হচ্ছে রক্তে সিসার মাত্রা (বিএলএল), ভারী ধাতুর মাত্রা, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের মাত্রা ও রক্তশূন্যতার বিষয়। এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে নারী ও শিশুদের দেহে উপস্থিতির মাত্রা নির্ণয় করা হবে। পরিবেশগত এসব ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান নির্ণয় ও মোকাবিলার মাধ্যমে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি তিনটি শিশুর মধ্যে একটির মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, এই জরিপ প্রতিটা শিশুর প্রয়োজন ও তাদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বাংলাদেশের শিশু ও নারী যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, সেগুলোর সময়োপযোগী সমাধান পাবে। এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জনসংখ্যা ও তাদের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির তথ্য নিয়ে জরিপে একটি আলাদা প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। বিবিএসের সহযোগিতায় বিস্তারিত জরিপ পরিকল্পনা, বাজেট ও প্রশ্নমালা চূড়ান্ত করা হবে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, এই জরিপের ফলাফল আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার তথ্যের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি সময়োপযোগী তথ্যের মাধ্যমে কার্যকর পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সহযোগী হবে।