১৫ মার্চ ১৯৮৫, প্রথম ডোমেইন নাম নিবন্ধিত হয়। এর নাম সিম্বলিকস ডটকম (Symbolics.com)। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের সিম্বলিকস কম্পিউটার করপোরেশন নিবন্ধন করে ডোমেইন নামটি।
২০০৯ সালে ন্যাপকিন ডটকমের কাছে বিক্রি করা হয় এই ঐতিহাসিক ডোমেইনটি। প্রসঙ্গত এক্সএফ ডটকম ইনভেস্টমেন্টস-পরবর্তী সময়ে ন্যাপকিন ডটকমে রূপান্তরিত হয়।
একসময় কম্পিউটার তৈরি করত সিম্বলিকস ইনকরপোরেশন। লিস্প প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করত তারা। আশির দশকে অনেক জনপ্রিয় সফটওয়্যার তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর সদর দফতর ছিল ম্যাসাচুসেটসের ক্যামব্রিজে। পরে কনকর্ডে স্থানান্তর করা হয়। তখন ক্যালিফোর্নিয়ার চ্যাটসওর্থ থেকেও উৎপাদন চালিয়ে যেত প্রতিষ্ঠানটি। সিম্বলিকসের প্রতিষ্ঠাতা সিইও ও চেয়ারম্যান ছিলেন রাসেল নফকার।
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) এআই ল্যাবের সহায়তায় সিম্বলিকসের ওয়েবসাইট ডিজাইন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য কারিগরি সহায়তাও দিত এমআইটি এআই ল্যাব। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৮১ সালে এলএম-২ বাজারে আনে সিম্বলিকস।
দ্বিতীয় ডোমেইন নামটি নিবন্ধিত হয় একই বছরের এপ্রিলে। নিবন্ধন করে বিবিএন টেকনোলজিস (বিবিএন ডটকম)। ওই বছরে ছয়টি ডোমেইন নিবন্ধন করা হয়। পরের চারটি করে যথাক্রমে থিংকিং মেশিনস (থিংক ডটকম), মাইক্রোইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি করপোরেশন (এমসিসি ডটকম), ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট করপোরেশন (ডিইসি ডটকম) ও নর্থগ্রুপ করপোরেশন (নর্থওপি ডটকম)। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো সবই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। ১৯৮৬ সালে আগের বছরের তুলনায় দশ গুণ বেশি ডোমেইন নাম নিবন্ধিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত এইচপি, বেল কমিউনিকেশন্স রিসার্চ, আইবিএম, ইনটেল, জেনারেল মোটরস, জিই, বোয়িং, অ্যাডোবি, ইউনিসিস প্রভৃতি। ১৯৮৭ সালে ডোমেইন নাম নিবন্ধন করে অ্যাপল, ফিলিপস, সিসকো প্রভৃতি। এ বছরে মাত্র ৪০টি ডোমেইন নাম নিবন্ধিত হয়। তবে ধীরে ধীরে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে থাকে বিশ্ব। সঙ্গত কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে হাজার হাজার ডোমেইন নাম নিবন্ধন হতে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেরিসাইনের (বৈশ্বিক ইন্টারনেট নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান) মতে, ২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে ১২ মিলিয়ন ডোমেইন নাম নিবন্ধিত হয়। সে হিসেবে ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধিত ডোমেইনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২ কোটি ৬৪ লাখ। শেষ প্রান্তিকে ২৩ লাখ ডোমেইন নাম যুক্ত হয়। অর্থাৎ নিবন্ধিত ডোমেইন নামের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২ কোটি ৯৩ লাখে। ২০১৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এ সংখ্যা ৩৩ কোটি ১৯ লাখ ছাড়িয়েছে, শেষ প্রান্তিকে ৯০ লাখ ডোমেইন নিবন্ধিত হয়। প্রসঙ্গত, ডোমেইন নামের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভেরিসাইন।
পাদটীকা
ডোমেইন হচ্ছে ওয়েবসাইটের ঠিকানা। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট খুঁজে পাবেন।
ওয়েবসাইট খোলার জন্য ডোমেইন কিনতে হয়। সাইটের ক্ষেত্রে ঠিকানার কাজ করে ডোমেইন নেম। যেমন http://sharebiz.net/ wKsev http://esharebiz.com/ হচ্ছে প্রোটোকল। sharebiz কিংবা sharebi প্রতিষ্ঠানের নাম বা ডোমেইন নেম বা সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন। .পড়স হচ্ছে ডোমেইন এক্সটেনশন। এই ডোমেইন নেমই ওয়েবসাইটটিকে অনন্যভাবে আইডেন্টিফাই করছে, যা ব্যবহার করে বিশ্বের যেকেউ যেকোনো স্থানে বসে ওয়েবসাইটিকে চিনবেন, প্রবেশ করতে পারবেন। মোবাইল ফোন নম্বরের মতো ডোমেইন নেমও ইউনিক। বলে রাখা ভালো, আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করেও ওয়েবসাইটে অ্যাকসেস করা যায়। আইপি অ্যাড্রেস সাধারণত সংখ্যায় হয়ে থাকে।
রতন কুমার দাস
তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার