প্রধানমন্ত্রীকে কমনওয়েলথ মহাসচিবের অভিনন্দন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এবং কনফারেন্স অন ইন্টারঅ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়া (সিআইসিএ)।

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক অভিনন্দন বার্তায় প্যাট্রিসিয়া বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে যে রূপরেখা দিয়েছিলেন, তাতে তিনি অনুপ্রাণিত। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই পররাষ্ট্রনীতির কথাও স্মরণ করেন তিনি।

প্যাট্রিসিয়া বলেন, ‘এসব মূল্যবোধে গুরুত্বপূর্ণ কাজ অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কমনওয়েলথ সচিবালয় আপনাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই

মূল্যবোধগুলো আমাদের কমনওয়েলথ সনদে প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে সহনশীলতা, শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া এবং টেকসই উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে।’

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনে জ্যামাইকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্রæস গোল্ডিংয়ের নেতৃত্বে স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের একটি কমনওয়েলথ বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে পেরে তিনি সন্তুষ্ট বলেও উল্লেখ করেন কমনওয়েলথ মহাসচিব। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ওই দলের প্রতিবেদনটি তার অনুসন্ধান এবং সুপারিশসহ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি এবং আপনার সঙ্গে এগুলো নিয়ে আলোচনা করার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছি।’

প্যাট্রিসিয়া বলেন, বাংলাদেশ কমনওয়েলথ পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি বলেন, ‘আমাদের বৈচিত্র্যময় দেশগুলো শান্তি, গণতন্ত্র, টেকসই উন্নয়নসহ অভিন্ন মূল্যবোধের মাধ্যমে আবদ্ধ।’ এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেনÑকমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মহাসাগর ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটাল উদ্ভাবন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যুবসমাজ, লিঙ্গসমতা, মানসিক স্বাস্থ্য ইস্যুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সক্রিয় সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্ব ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

কমনওয়েলথ মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত আছি, যাতে আপনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আপনার পঞ্চম মেয়াদে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের সব ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে লন্ডনের মার্লবোরো হাউসে আবার স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছি। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর সামোয়ায় অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের বৈঠকে (সিএইচওজিএম) আপনার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় রয়েছি।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক বার্তায় ইআইবি প্রেসিডেন্ট নাদিয়া ক্যালভিনো বলেন, ‘ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পঞ্চম মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ইআইবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে লালন করে।’

ইআইবি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে আপনার দেশ দ্রুত এগিয়ে গেছে এবং আমাদের মধ্যে সম্পর্ককে ক্রমাগত জোরদার করতে ১ বিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগের সঙ্গে এটি একটি বিশেষত্বের বিষয় এবং অব্যাহতভাবে জোরদার হতে দেখা যাছে।’

এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, গ্রিন এনার্জি উৎপাদনের জন্য ইআইবি সম্প্রতি ব্রাসেলসে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ফ্রেমওয়ার্ক ঋণের সাম্প্রতিক চুক্তি স্বাক্ষর, অভিন্ন জলবায়ু পদক্ষেপের উদ্দেশ্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে একটি ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ। এই ঋণ ইউরোপীয় ৪৫ মিলিয়ন ইউরো অনুদানের পরিপূরক।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইইউ-বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ব্যাপারে এগিয়ে যাচ্ছি। রেলওয়ে ও পানি এবং স্যানিটেশনের মতো বিভিন্ন খাতে আমাদের বিদ্যমান সহযোগিতাকে আরও গভীর করার সুযোগগুলো খুঁজে বের করছি।’

সর্বশেষ নাদিয়া ক্যালভিনো বলেন, ‘সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী অনুগ্রহ করে আপনি আমার সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস গ্রহণ করুন।’

অপর এক চিঠিতে সিআইসিএ মহাসচিব কাইরাত সারিবে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন জানাতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’

তিনি উল্লেখ করেন, সিআইসিএ’র সক্রিয় সদস্য বাংলাদেশ সিআইসিএ’র সব দেশের স্বার্থে ক্রমাগতভাবে সিআইসিএ প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে এবং আস্থা তৈরির পদক্ষেপে অবদান রাখছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে, বাংলাদেশ তার নিজস্ব জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থ এবং নীতির প্রচারের জন্য সিআইসিএ’র সম্ভাবনাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাবে।’

তিনি বলেন ‘কনভেনশন অন প্রিভিলেজেজ অ্যান্ড ইমিউনিটিজ অব সেক্রেটারিয়েট ২০১০ স্বাক্ষর এবং সমর্থন করায় আপনার সরকারের সিদ্ধান্তে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ; যা একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক সংস্থায় সিআইসিএ’র চলমান রূপান্তরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এবং সময়োপযোগী অর্জন।’

সবশেষে মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য এবং এই সম্মানজনক ও গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রতিটি ক্ষেত্রে পেশাগত সাফল্য কামনা করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০