Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:25 am

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনা হোক

 

আগামী পাঁচ বছর উন্নয়ন কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রোববার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ নির্দেশনা দেন তিনি। নির্দেশনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আপনি যখন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেন, তখন অবশ্যই মনে রাখতে হবে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেখান থেকে কী পাওয়া যাবে এবং দেশ ও জনগণ কতটা উপকৃত হবে। তিনি নিজেও শুধু অর্থ ব্যয়ের জন্য কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেন না বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়; যেমন বড় বা ছোট হোক যেকোনো অবকাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণের প্রকল্পে কাজের ধীরগতিতে ব্যয় বেড়ে যায়। কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ার সময় নির্মাণসামগ্রী, পরিবহনব্যয়, কর্মীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক সম্ভাব্য হিসাব ধরে প্রকল্পব্যয় নির্ধারণ করা হয়। কাজে ধীরগতি দীর্ঘসূত্রতায় পর্যবসিত হলে ব্যয় অনেক বাড়ে। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হতে ১০ বছর লেগে যাওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে। নির্মাণসামগ্রীর দাম, পরিবহন খরচ ও কর্মীদের বেতন-ভাতা এক জায়গায় থাকে না। বছর বছর তা বেড়ে যায়, কিংবা বাড়াতে হয়। সংগত কারণেই নির্মাণব্যয়ও বাড়ে।

দেশে খুব কম প্রকল্পই আছে, যেগুলো টেকসই মানের নিশ্চয়তা বিধানপূর্বক যথাসময়ে শেষ হয়েছে। কোনো প্রকল্পের নির্মাণকাজ একাধিকবার উদ্বোধনেরও দৃষ্টান্ত আছে। আবার মাঝেমধ্যে অসমাপ্ত রেখেই শেষ করা হয় নির্মাণকাজ। বাকি কাজ শেষ করতে নিতে হয় ‘অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ প্রকল্প’। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খুবই প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী বলেই আমরা মনে করি।

এর আগেও  প্রধানমন্ত্রী নতুন প্রকল্প অনুমোদনের আগে-পরে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নির্মাণ-পরবর্তী অবস্থা পর্যালোচনার ব্যবস্থায় ১৫ দফা অনুশাসন দিয়েছেন। ওই অনুশাসনের সারৎসার হলোÑযাচাই-বাছাই ছাড়া নেয়া যাবে না উন্নয়ন প্রকল্প; জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছাড়া অন্য প্রকল্প নিরুৎসাহিত করতে হবে; নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে; প্রকল্পে ত্রæটি থাকলে দায়ী থাকবেন সংশ্লিষ্টরা, তাদের জবাবদিহি করতে হবে ও ত্রæটি প্রমাণিত হলে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে প্রভৃতি। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন-সংক্রান্ত চিঠি সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এখন প্রধানমন্ত্রী নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন এড়িয়ে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস কারও নেই। তাই আশা করা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রকল্পের নিবিড় তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করবে। প্রয়োজনে বিশেষায়িত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা নেবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন নির্দেশনা যথারীতি প্রতিপালিত হলে দেশে অনিয়ম-দুর্নীতিতে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ও সম্পদের অপব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব।