প্রতিনিধি, ফরিদপুর: ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুই প্রতারক হলেনÑচন্দ্র শেখর মিত্র (৫৪) ও লিয়াকত হোসেন (৫১)। তাদের একজনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছটি থানার কুলকাঠি এলাকায় ও অপরজনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার কুমারিয়াজোলা এলাকায়।
তারা দুজনেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অফিসারকে ফোন দিয়ে ও প্রভাবিত করে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান ওই দুই প্রতারককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, তাদের দুজনকে পৃথক স্থান থেকে মঙ্গলবার পৃথক সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার শাহজাহান জানান, ফরিদপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ড্রাইভার, পরিছন্নতা কর্মী, নৈশপ্রহরী নিয়োগের জন্য গত ০৪-১২-২০২২ তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন জেলার আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি দরপত্রে অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানও দরপত্র জমা দেয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরে চন্দ্র শেখর মিত্র নামের এক প্রতারক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে গত ০৭-০১-২০২৩ তারিখে একাধিকবার ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মোস্তফা ফারুকের ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করে ওই ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডকে এই আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয় এবং কৌশলে নানা ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তারা। একপর্যায়ে আসামি চন্দ্র শেখর মিত্র ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে এসে নিজেকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজটি ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডকে দেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চন্দ্র শেখর মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে সে স্বীকার করে এ প্রতারণার কথা। তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে সারাদেশে এভাবে প্রতারণা করে আসছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শেখ মো. আবদুল্লাহ বিন কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া, ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম, ডিবির ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশীদসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা।