নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুল হক শাকিল মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি… রাজিউন)। গতকাল রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্তোরাঁয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর।
গুলশান-২-এর সামদাদো জাপানিজ কুইজিন রেস্তোরাঁয় দুপুরে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রী তার বিশেষ সহকারী শাকিলের অকালমৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মৃত্যুতে জাতি একজন বঙ্গবন্ধুপ্রেমিক ও দক্ষ সংগঠককে হারালো। তিনি আরও বলেন, ছাত্রনেতা হিসেবে শাকিল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও।
প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ সহকারীর মৃত্যুসংবাদ শুনে সামদাদোতে উপস্থিত হন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ পরিবারের সদস্যরা।
বিকালের দিকে ওই রেস্তোরাঁর সামনে বিদ্যুৎ? ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, শাকিলের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। আজ বুধবার তার ময়নাতদন্ত করা হবে। পরে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা হবে। সেখান থেকে মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের বাগমারায় নেওয়া হবে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বিকাল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন।
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে নবগঠিত আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সেল সিআরআই পরিচালনার দায়িত্ব পান ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি শাকিল।
২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিবের দায়িত্ব পান তিনি। চার বছর পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) করা হয়।
এরপর ২০১৪ সাল থেকে অতিরিক্ত সচিব মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
পৈতৃক নিবাস ময়মনসিংহ হলেও শাকিলের জন্ম ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলে। তার বাবা অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আইনজীবী-শিক্ষক দম্পতির সন্তান শাকিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল ও আনন্দমোহন কলেজে পড়েছেন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
সাবেক এ ছাত্রনেতা নিয়মিত কবিতা লিখতেন। ‘খেরোখাতার পাতা থেকে’ ও ‘মন খারাপের গাড়ী’ নামে তার দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আইনজীবী স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম সামদাদোর পাঁচ কর্মীকে তুলে নিয়ে যান। তবে এ বিষয়ে ওসি সিরাজুল মন্তব্য করতে রাজি হননি।