শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের সময় তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। গত শুক্রবার ভারতের দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আলোচনার টেবিলে না আসার পরিপ্রেক্ষিতে ওই সফরে তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি হবে না।
‘প্রতিবেশী প্রথম’ এই নীতির অংশ হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফর করেন এবং দুই দেশের মধ্যকার ৪১ বছরের পুরোনো সীমান্ত সমস্যা সমাধান করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ভারত সফরের সময় একই ধরনের ঐতিহাসিক তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। তবে ওই চুক্তি রাজ্য সরকার পর্যায়ে আটকে রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এপ্রিলে তিস্তা চুক্তি ছাড়াই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর হতে পারে।’
বাংলাদেশে মোদির সফরের সময় তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও ছিলেন। মমতা ব্যানার্জি তখন ‘তিস্তা ও ফেনী নদীর পানিবণ্টনে নিরপেক্ষ সমাধান’ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তবে এসবই অতীত এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এ বিষয়ে আন্তরিকতার অভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের মধ্যে বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আলোচনার টেবিলে আনাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফর করবেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের খুঁটিনাটি বিষয় ঠিক করবেন এবং পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার অন্য ক্ষেত্রগুলো পর্যালোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার সফরকালে ভারতের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারসহ ১২টিরও বেশি চুক্তি সই হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশি এক কূটনীতিক বলেন, ভারত ৪১টি চুক্তির তালিকা পাঠিয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে শেখ হাসিনার এ সফর হওয়ার কথা ছিল। সেজন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব দিল্লি এসেছিলেন। কিন্তু নানা কারণে সফরটি পেছানোর অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এমজে আকবর এরপর বাংলাদেশে আসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি কথা বলেন। সেই সময় ফেব্রুয়ারিতে শেখ হাসিনার ভারত সফর হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু উত্তর প্রদেশসহ পাঁচ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের কারণে ফেব্রুয়ারির সফরও পিছিয়ে দেয় ভারত। আগামী ১১ মার্চ এ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে। এর দুদিন আগে শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। শেষ হবে ১২ এপ্রিল। ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। কাজেই মনে করা হচ্ছে, শেখ হাসিনার ভারত সফর হবে এপ্রিলেই।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি না হওয়ার সম্ভাবনা

Add Comment