নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) গভর্নিং কাউন্সিলের সভায় অংশগ্রহণ ও ভ্যাটিকান সফরের উদ্দেশ্যে ইতালি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী চার দিনের সরকারি সফরে ইমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে রোম রওনা হবেন বলে তার প্রেসসচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন।
আইএফএডির প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হংবো এবং পোপ ফ্রান্সিসের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর হচ্ছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী জানান। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, “গঠনমূলক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ভূমিকার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একজন ‘ইন্টারন্যাশনাল লিডার ফর চেইঞ্জ’ হিসেবে অভিহিত হয়েছেন। পল্লী উন্নয়ন এবং নারী ও পুরুষের সমতা আনয়নে তার সাফল্য ও অবদান আজ সর্বত্র স্বীকৃত। আইএফএডির সভায় প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এর ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।”
জানা গেছে, ঢাকা থেকে রওনা হয়ে দুবাইয়ে যাত্রাবিরতির পর রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী ১২ ফেব্রুয়ারি ভ্যাটিক্যান সফর করবেন। সেখানে তিনি পোপ ফ্রান্সিস ও সেক্রেটারি স্টেট অব ভ্যাটিক্যান সিটি কার্ডিনাল পেইটরো পারোলাইনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে পোপ ফ্রান্সিস গত ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফর করে গিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে রোমে আইএফএডির সদর দফতরে গভর্নিং কাউন্সিলের ৪১তম অধিবেশনে যোগ দেবেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। এবারের গভর্নিং কাউন্সিলের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছেÑ‘ফ্রম ফ্রাগিলিটি টু লং টার্ম রেজিলেন্স: ইনভেস্টিং ইন সাসটেইনেবল রুরাল ইকোনমিকস’।
সম্মেলনে আইএফএডির প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা রোমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেবেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।
১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত আর্থিক সংস্থা হিসেবে আইএফএডি প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি মূলত কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। প্রতিষ্ঠার পর আইএফএডির প্রথম প্রকল্পটি ছিল বাংলাদেশে, যা ১৯৭৮ সালে নেওয়া হয়। সংস্থাটি এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচিতে প্রায় ৭৮২ মিলিয়ন ডলারের অনুদান এবং স্বল্পসুদ ও সহজ শর্তে ঋণ দিয়েছে। এর ফলে দেশের চার কোটিরও বেশি জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়েছে।