নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য দুটি ট্রাইব্যুনাল চালুসহ চারটি বিষয় বাস্তবায়নের আবেদন নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা।
গতকাল বুধবার দুপুরে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
এ সময় কমিটির পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতির কাছে চার দফা দাবি-সংবলিত একটি আবেদন জমা দেন তারা। আবেদনে বলা হয়, শীর্ষস্থানীয় গণহত্যাকারী ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীর বিচার করলেও এখনও পর্যন্ত
গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী সংগঠন এবং ’৭১ সালে পাকিস্তানি হাইকমান্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি।
এক. সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা কর্তৃক স্থগিত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয়া।
দুই. আপিলের জটিলতা নিরসনের জন্য আপিল বিভাগে আরও বিচারপতি নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি অপেক্ষমাণ মামলাগুলো দ্রুত শুনানির ব্যবস্থা করুন।
তিন. কম্বোডিয়া ও অন্যান্য কয়েকটি দেশে যুদ্ধাপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে আপিল শুনানি নিষ্পত্তি করেন। বাংলাদেশের মতো কোথাও এসব ট্রাইব্যুনালের মামলার আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয় না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কম্বোডিয়ার মতো আপিলের ব্যবস্থা করা হবে। ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা যাবে।
চার. পুরোনো হাইকোর্ট ভবনে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আমরা এই বিচার কার্যক্রমের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আবেদন করেছিলাম মামলার সব কার্যবিবরণী ও দলিলপত্র যথাযথভাবে সংরক্ষণ করার জন্য, যাতে বিচারকাজ শেষ হওয়ার পর নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের প্যালেস অব জাস্টিসের মতো আমাদের ট্রাইব্যুনালের বর্তমান ভবনটি জাদুঘর ও আর্কাইভে রূপান্তরিত করা যায়। এর ফলে আগামী প্রজš§ এবং বিশ্ববাসী ’৭১-এর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতার পাশাপাশি জানতে পারবে কী ধরনের প্রতিকূলতার ভেতর ৪০-৫০ বছর পরও সাফল্যের সঙ্গে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ পরিবার এবং বিচারপ্রত্যাশী গোটা জাতির স্বার্থে আমাদের আবেদন বিবেচনা করা হবে বলেও আবেদনটিতে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।