প্রতিনিধি, ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার প্রবাসী আফসার মোল্লার স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পরকীয়া প্রেমিক ওবায়দুর মোল্যাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল রোববার বিকালে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ রায় দেন। আসামি জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় রায়ের সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিল।
জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওবায়দুর মোল্যা (২৮) জেলার বোয়ালমারী উপজেলার পশ্চিম ভাটদী গ্রামের ওয়াহেদ মোল্যার ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে জেলার বোয়ালমারী উপজেলার পশ্চিম ভাটদী গ্রামের মৃত কাদের মোল্যার ছেলে আফসার মোল্যার সঙ্গে পাশের মধুখালী উপজেলার গন্ধখালী গ্রামের জলিল মুন্সীর মেয়ে মনিরা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১১ ও ৮ বছরের দুটি সন্তান ছিল। জীবিকার তাগিদে মনিরার স্বামী সৌদি প্রবাসী থাকায় তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশী ওবায়দুরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারই সূত্র ধরে নিহত মনিরা বেগম তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে।
গত ২০১৯ সালের ১০ মার্চ রাতে মনিরাকে স্বামী বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে লাশ ওই গ্রামের গম ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার ৪ দিন পর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে প্রথমে নিখোঁজ জিডি ও লাশ উদ্ধারের পর ওবায়দুরসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বোয়ালমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমালী থানার উপপরিদর্শক আমিনুর রহমান হত্যা মামলাটি তদন্ত করে পরকীয়া প্রেমিক ওবায়দুর মোল্যার অভিযুক্ত প্রমাণ পাওয়ায় ১৭ মার্চ ২০১৯ সালে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (পিপি) মো. সানোয়ার হোসেন জানান, অভিযুক্ত ওবায়দুর মোল্যা আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে মনিরা বেগমকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। এছাড়া দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শিহাবুল ইসলাম দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এই রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।