নিজস্ব প্রতিবেদক : ঋণগ্রহীতা সাজিয়ে ৩১ লাখ ৬৫ হাজার ৬০২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপাল এক্সিকিউটিভ অফিসার এইচ. এম. বদরুদ্দৌজার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত বুধবার সংস্থাটির সহকারী পরিচালক ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে দুদকের রাঙামাটি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামির বিরুদ্ধে ৪০৬/৪০৯/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি ২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৯ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়ে তিনি তার অধিক্ষেত্রের বাহিরে ৭০ জন প্রবাসীর মাঝে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করেন। তার মধ্যে মোট ২২ লাখ ৪ হাজার ৩৯৮ টাকা পরিশোধ বা আদায় করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঋণ বিতরণ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আসামিকে ভুয়া ঋণগ্রহীতাকে ঋণ বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তিকে একাধিক ঋণের জামিনদার করেন। আসামি মুনছুর আলম নিজেই ৯টি ঋণের জামিনদার হয়েছেন। একই ব্যক্তিকে একাধিক ঋণের জামিনদার বানিয়ে ঋণ প্রদান করা ব্যাংকের নিয়মাচারের লঙ্ঘন মর্মে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, আসামি মুহাম্মদ মনছুর আলম উল্লিখিত জামিনদারদের সহযোগিতায় সিন্ডিকেট তৈরি করে বাঁশখালী এলাকা থেকে কিছু লোক জোগাড় করে প্রত্যেকের নিকট হতে অতিরিক্ত চেক জমা নিতেন। আসামি মনছুর আলম নিজেই প্রতারণার আশ্রয়ে বিভিন্ন ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ভুয়া ব্যাংক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বেশ কিছু চেকও গ্রহণ করেছেন। ওই চেকগুলো পরবর্তী সময় ঋণ উত্তোলনে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতার জন্য একজন জামিনদারের তিনটি চেক জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা তিনটির অতিরিক্ত চেক গ্রহণ করে পরবর্তী সময় ঋণ গ্রহীতাদের অগোচরে এবং জামিনদারদের অগোচরে ঋণ আবেদনপত্রে জাল স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলন করেছেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় দেখা যায়, আসামি এইচ.এম. বদরুদ্দৌজার বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া জামিনদার এবং ভুয়া ঋণ গ্রহীতা সৃষ্টি করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে ব্যাংকের ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭৪ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে তাদের দাখিলকৃত অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এসব অভিযোগ অনুসন্ধানকালে আসামি মুহাম্মদ মনছুর আলম নিজেকে ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করে ভুয়া জামিনদার এবং ঋণ গ্রহীতা তৈরিতে বা তৈরি করার অপরাধে ব্যাংক ব্যবস্থাপক আসামি এইচ.এম. বদরুদ্দৌজাকে সহযোগিতা করেছেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়।