Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:34 pm

প্রবাসী বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিতে হবে

দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হয়নি। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ অনেক কম। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে উপযোগী পরিবেশ ও পরিকল্পনা দরকার। শুধু বিদেশি নয়, প্রবাসী বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। কারণ, প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ প্রবাসী রয়েছেন। যদি এক কোটি ৪০ লাখ প্রবাসীর জন্য সুষ্ঠু বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টেকনিক্যাল এনালিস্টের ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমত উল্লা ও সেন্টার ফর এনআরবির চেয়ারপারসন এমএস সেকিল চৌধুরী।
মো. রহমত উল্লা বলেন, গত আট বছরে পুঁজিবাজার মন্দাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। পুঁজিবাজার গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা বেড়েছে। অর্থাৎ এক মাসের মধ্যে তিন থেকে চার দিন সামান্য কমলেও টানা ২৬ দিন বেড়েছে। এটিকে স্বাভাবিক চিত্র বলা যায় না। পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক চিত্র হচ্ছে আট থেকে ১২ দিন বাড়বে এবং সেখান থেকে সামান্য কারেকশন হবে। বাজারে এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু এক মাসে বাজার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ফলে বাজার সংশোধনের কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালের পর পুঁজিবাজার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে পলিসিগত পরিবর্তনসহ অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে। প্রথম দিকে পুঁজিবাজারে তেমন দক্ষ জনবল ছিল না। ক্রমান্বয়ে এ বিষয়গুলো কমে আসছে এবং দক্ষ জনবল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এমএস সেকিল চৌধুরী বলেন, বাজারে অর্থপ্রবাহের যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে, যেখান থেকে টাকা পুঁজিবাজারের আসছে কি না সেটি আগে দেখতে হবে। তবে প্রতিদিন গড় লেনদেন প্রায় ৮০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও সক্রিয় রয়েছেন।
নতুন অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন সময় ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এখন যদি তিনি পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে কীভাবে বাজারের উন্নয়ন করা যায়, কীভাবে ভালো মানের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত ও সম্প্রসারণ করা যায়Ñএ বিষয়গুলো নিশ্চিত করেন। তবে তা পুঁজিবাজারের জন্য ভালো হবে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ধনীরা ধনী হচ্ছে আর গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে। এর ফলে সমাজে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। এটিকে রক্ষা করতে যদি পুঁজিবাজার নজরে রাখা যায়, তাহলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও সুবিধা পাবেন।
দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হয়নি। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ অনেক কম। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে উপযোগী পরিবেশ এবং আরও পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। শুধু বিদেশি বিনিয়োগ নয়, প্রবাসী বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায়Ñসেদিকে নজর দিতে হবে। কারণ, প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ প্রবাসী রয়েছেন। যদি এক কোটি ৪০ লাখ প্রবাসীর জন্য বাজারে সুষ্ঠু বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে। আবার গরিবের সংখ্যা কমেছে। কথা হচ্ছে মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত, অর্থাৎ সীমিত আয়ের মানুষের সঞ্চয়ের টাকা রক্ষার জন্য পুঁজিবাজারে নিরাপত্তার জায়গা থাকা উচিত। যাতে করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হবেন এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।
তিনি বিনিয়োগকারীর উদ্দেশে বলেন, দেখে-শুনে-বুঝে ভালো মানের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। ফলে লাভ কম হলেও ক্ষতি হবে না। কারও কথায় বা গুজবে বিনিয়োগ করবেন না। কারণ, টাকা আপনার, লাভ-ক্ষতি আপনাকেই বহন করতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ