নিজস্ব প্রতিবেদক: কাজ নিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে নারীকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনায় সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল করে ফোরামের নেতারা প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদপত্রে আসা তথ্যের বরাত দিয়ে ফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি আরবে কাজ করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে দেশে ফিরেছেন ৮৫০ নারী। এর মধ্যে গত আগস্টে একদিনেই ফিরেছেন ১০৯ জন। তাদের অনেকে সেখানে শারীরিক-মানসিক ও যৌননিপীড়নের শিকার হয়েছেন জানিয়ে ফোরাম বলছে, চলতি বছর গত ১০ মাসে সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশ থেকে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ১১৯ গৃহকর্মী।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রওশন আরা রুশোর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসুর পরিচালনায় ফোরামের ঢাকা নগর শাখার সদস্য রুখসানা আফরোজ আশা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা নগর শাখার সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ সমাবেশে বক্তব্য দেন।
এছাড়া সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের ঢাকা নগর শাখার সভাপতি জুলফিকার আলী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী জয়ও বক্তব্য দেন সমাবেশে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রবাসী শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তারা বিদেশে কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন, নির্যাতন সইতে না পেরে সব খুইয়ে দেশে ফিরে আসছেন। দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো এ শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সরকার কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না?’
প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা ও প্রবাসে দূতাবাসগুলো তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছে না বলেও অভিযোগ করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের নেতারা।
সৌদি আরবে ‘নির্যাতনের শিকার হয়ে’ নিহত নাজমা হত্যার বিচার দাবি করা হয় সমাবেশে। মানিকগঞ্জের এই নারী ১০ মাস আগে দালাল ধরে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে হাসপাতালে কাজ দেওয়ার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয় গৃহকর্মীর কাজ।
গত ২ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবেই মারা যান ৪০ বছর বয়সী নাজমা। পরিবারের অভিযোগ, গৃহকর্তার নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়েছে। নাজমার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারকে অবিলম্বে কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয় সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সমাবেশ থেকে।